Advertisement

Mahatma Gandhi Celibacy Experiments: একসঙ্গে স্নান থেকে শোওয়া, ব্রহ্মচর্যের যে পরীক্ষা করতেন গান্ধী

মাত্র ১৩ বছর বয়সে কস্তুরবাকে বিয়ে করেন মহাত্মা গান্ধী। তাঁদের বিবাহিত জীবন শুরুতে স্বাভাবিক ছিল। ৪টি সন্তান হয় গান্ধী দম্পতির। পরে গান্ধী জানিয়েছিলেন, যৌনতায় তাঁর আগ্রহ ছিল, সেনিয়ে ভাবতেনও।

মহাত্মা গান্ধীর ব্রহ্মচর্য জীবন ঘিরে বিতর্ক।
শুভঙ্কর মিত্র
  • কলকাতা ,
  • 02 Oct 2023,
  • अपडेटेड 4:12 PM IST
  • ব্রহ্মচর্য পালনের পরীক্ষানিরীক্ষা নিয়েও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে জনমানসের একাংশে।
  • বিভিন্ন চিঠি এবং বইয়ে গান্ধী নিজে দাবি করেছেন, ব্রহ্মচর্য পালনে তাঁর উৎসাহ চরমে পৌঁছে গিয়েছিল।

অহিংসা এবং সত্যাগ্রহের জন্য সারাবিশ্বে মহাত্মা গান্ধীর পরিচিতি। তবে বিতর্কও পিছু ছাড়েনি তাঁকে। বিভিন্ন সময় গান্ধীর সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। ইদানীং তাঁর ব্রহ্মচর্য পালনের পরীক্ষানিরীক্ষা নিয়েও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে জনমানসের একাংশে। বিভিন্ন চিঠি এবং বইয়ে গান্ধী নিজে দাবি করেছেন, ব্রহ্মচর্য পালনে তাঁর উৎসাহ চরমে পৌঁছে গিয়েছিল। এতটাই যে, কমবয়সী মহিলাদের সঙ্গে শোওয়া বা নগ্ন থাকা থেকেও বিরত ছিলেন না। এভাবেই তিনি পরীক্ষা করতেন কতটা দৃঢ়তা সঙ্গে ব্রহ্মচর্যে অনড় থাকতে পারছেন।            
       
স্ত্রী কস্তুরবার সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ছিল?

মাত্র ১৩ বছর বয়সে কস্তুরবাকে বিয়ে করেন মহাত্মা গান্ধী। তাঁদের বিবাহিত জীবন শুরুতে স্বাভাবিক ছিল। ৪টি সন্তান হয় গান্ধী দম্পতির। পরে গান্ধী জানিয়েছিলেন, যৌনতায় তাঁর আগ্রহ ছিল, সেনিয়ে ভাবতেনও। নিজের বই 'দ্য স্টোরি অফ মাই এক্সপেরিমেন্টস উইথ ট্রুথ'-এ গান্ধী লিখেছেন,'আমাদের বিবাহিত জীবনের প্রথম ৫ বছরে মাত্র ৬ মাসই একসঙ্গে ছিলাম। তখন স্কুলেও কস্তুরবাকে নিয়ে ভাবতাম। রাতে ওঁর সান্নিধ্য পাওয়ার চিন্তাও মাথায় ঘুরপাক খেত। আমি ওকে জাগিয়ে রাখতাম। অনেক রাত পর্যন্ত কথা বলতাম। সেই সময় আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখনও আমার মাথায় যৌন মিলনের চিন্তা ঘুরপাক খেত। যা নিয়ে পরে অপরাধবোধ তৈরি হয়েছিল। 

কখন ব্রহ্মচর্যের ব্রত গ্রহণ করেন গান্ধী? 

দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকার সময় ১৯০৬ সালে ৩৮ বছর বয়সে ব্রহ্মচর্য গ্রহণ করেন মহাত্মা গান্ধী। তার পর থেকে ব্রহ্মচর্য পালনে তিনি আরও কঠোর হতে শুরু করেন। এনিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষাও শুরু করেন গান্ধী। মহিলাদের সঙ্গে এমনভাবে মিশতেন, যা সামাজিকভাবে স্বীকৃত নয়। ব্রহ্মচর্য নিয়ে তাঁর পরীক্ষানিরীক্ষার বিষয়টি কখনও গোপন করেননি গান্ধী।  

একত্রে স্নান গান্ধীর, বিতর্ক
 
গান্ধীর ব্রহ্মচর্য নিয়ে বিতর্কিত কথা লিখেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক বেদ মেহতা। তাঁর বই 'মহাত্মা গান্ধী অ্যান্ড হিজ অ্যাপসটলস'-এ লিখেছেন,'নিজের ব্যক্তিগত সচিব প্যারেলালের বোন সুশীলা নায়ারের সঙ্গে সবরমতী আশ্রমে নগ্ন হয়ে গান্ধীর স্নান নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়েছিল। সুশীলা তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকও ছিলেন। বইয়ে লেখা আছে, ৬৯ বছর বয়সী গান্ধীজি ২৪ বছর বয়সী সুশীলার সঙ্গে স্নান করতেন। যার জেরে সেবাগ্রাম আশ্রমে তোলপাড় হয়েছিল। এটা ১৯৩৮ সালের কথা। মহাত্মা গান্ধী ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, দু'জনের মধ্যে বাধা থাকত। তিনি চোখ বন্ধ রাখতেন। সুশলী যে স্নান করছেন তা অনুমানেই বুঝতেন। 

Advertisement

কমবয়সীদের সঙ্গে শোওয়া

মহাত্মা গান্ধীর ব্রহ্মচর্য পালন শুধুমাত্র স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তার পরিধি আরও বাড়তে থাকে। তাঁর আশ্রমে স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে থাকার উপরে নিষেধাজ্ঞা ছিল। গান্ধীর অভিমত ছিল, কোনও অবস্থাতেই স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত পরিসরে দেখা করা উচিত নয়। যৌন সম্পর্ক নিয়ে মনে কোনও ধরনের ভাবনা আসলে, ঠান্ডা জলে স্নান করতে হবে। তবে নিজের জন্য আলাদা নিয়ম গান্ধীর। ১৯২০ সালে কমবয়সীদের মেয়েদের কাঁধে হাত রেখে সকাল-সন্ধ্যায় হাঁটা শুরু করেন গান্ধী। তাঁর নাতনি আভা এবং মনু প্রায়ই সঙ্গ দিতেন তাঁকে। তার পর গান্ধীজিকে ম্যাসাজ দেওয়া হত। একসঙ্গে স্নানও করতেন। সুশীলা নায়ার ছাড়াও একাধিক মহিলা গান্ধীকে স্নানে সঙ্গ দিতেন। 

সময়ের সঙ্গে এই পরীক্ষানিরীক্ষা আরও এগিয়ে গেল। কম বয়সী মেয়েদের পাশে শুতেও শুরু করলেন গান্ধী। আশ্রমের দেখভালকারী মুন্নালাল শাহকে লেখা চিঠিতে এ কথা স্বীকারও করেছেন। তিনি লিখেছেন- 'আভা আমার সঙ্গে তিন রাত শুয়েছিল। কাঞ্চন মাত্র এক রাত। বীনসের সঙ্গে আমার শোওয়া দুর্ঘটনাই বলতে পার। ও আমার খুব কাছে শুয়েছিল।' পাঠকদের বলা দরকার, এই কাঞ্চন মুন্নার স্ত্রী। চিঠিতে গান্ধীজি এটাও স্বীকার করেছেন, এমন পরিস্থিতিতে স্বামীর রাগ হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু তাঁর মনে কোনও অনুভূতি ছিল না। 

গান্ধীর ব্রহ্মচর্যের ব্যাখ্যা

মহাত্মা গান্ধীর পুত্রবধূ আভা গান্ধী নিজেই লেখক বেদ মেহতাকে বলেছিলেন, ১৬ বছর বয়সে তাঁকে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে ঘুমোনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ব্রহ্মচর্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে এই ধরনের বিতর্কিত ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছিল। তাঁর ব্রহ্মচর্যের সংজ্ঞা ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন গান্ধী। তাঁর মতে,'যে পুরুষ সুন্দরী নারীর সঙ্গে নগ্ন হয়ে শুয়েও যৌন অনুভূতি থেকে দূরে থাকেন, তিনিই খাঁটি ব্রহ্মচারী।' এ কথা বর্ণিত রয়েছে মহাত্মা গান্ধী পূর্ণাহুতি-র দ্বিতীয় খণ্ডে।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement