A New Green Pit Viper: উত্তর-পূর্ব ভারতে এক নতুন প্রজাতির বিষধর সাপ আবিষ্কৃত হয়েছে। রহস্য়ময় এই প্রাণিটি খুবই আকর্ষণীয়। এর কারণ সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কাছেপিঠেই লুকিয়ে থাকে। এবং তার থেকেও বড় কথা অন্যান্য খুব কাছের প্রজাতি হিসেবে ভুল শনাক্ত করা হয়। নয়া প্রজাতির এই সাপ খুঁজে পেয়েছেন একদল গবেষক। তাঁদের মধ্যে এক বাঙালি গবেষকও রয়েছে। তাঁদের সন্ধানের খবর ইতিমধ্যে এক আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
নতুন এই প্রজাতি মেঘালয়, মিজোরামে তুলনামূলকভাবে বেশ সাধারণ বা কমন ছিল। গুয়াহাটি থেকেও সেটার অস্তিত্বের ব্যাপারে তথ্য রেকর্ড করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা পোপস পিট ভাইপার (Trimeresurus popeiorum) বা Gumprecht's Green pitviper (Trimeresurus gumprechti) হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
উমরোই মিলিটারি স্টেশন
সম্প্রতি গুয়াহাটির হেল্প আর্থ-এর জয়াদিত্য পুরকায়স্থ মেঘালয়ের উমরোই মিলিটারি স্টেশনের কর্নেল যশপাল সিং রাঠির সঙ্গে এ ব্য়াপারে কাজ করেছেন। সাপটিকে প্রথম উমরোই মিলিটারি স্টেশনে দেখা গিয়েছিল। প্রথম দিকে সাপটিকে দেখতে অনেকটা পোপস পিট ভাইপারের মতোই মনে হয়েছিল। তবে চোখের রঙ ছিল ভিন্ন।
আরও পড়ুন: কম খরচে টয় ট্রেন-ভিস্তাডোমে পাহাড় ঘুরুন
আলাদা কোথায়?
আরও একটু খোঁজখবর করে দেখা গিয়েছে যে এই প্রজাতি এবং পোপস পিট ভাইপারের হিমিপেনিস (যৌন অঙ্গ) খুব আলাদা। পরে তাঁরা মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এইচ টি লালরেমসাঙ্গার সঙ্গে কাজে নামেন। তিনি মিজোরামের জন্য একই প্রজাতির ব্য়াপারে তথ্য রেকর্ড করেছেন। জানান জয়াদিত্য।
এনসিবিএস-এর জিশান মির্জা জেনেটিক বিশ্লেষণ করেছেন। যাতে এ সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য পাওয়া যায়। সেই ফলাফল বলছে, এটা এক নতুন প্রজাতির সাপ। কর্নেল যশপাল সিং রাঠির প্রয়াত মায়ের স্মরণে প্রজাতিটির নামকরণ করা হয়েছিল ট্রাইমেরেসুরাস মায়ে (Trimeresurus mayae) বা মায়ার পিট ভাইপার।
এই প্রজাতির সাপটি বিষাধর। এই ব্যাপারে গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রভাব রয়েছে। ভারেতের মতো দেশে গত দু'দশকে প্রায় ১.২ মিলিয়ন মানুষ সাপের কামড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এবং আরও অনেকে সাপের আঘাতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারিয়েছে। সেখানে একটি নতুন বিষাধর সাপের আবিষ্কার জনস্বাস্থ্যের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
মানুষের প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করবে
সাপের বিষ হল একটি জটিল প্রোটিন। যা বেশিরভাগই এক প্রজাতির জন্য সাধারণ এবং এইভাবে একটি নতুন প্রজাতি খুঁজে পাওয়া, তার বিষ এবং মানুষের জীবনে এর প্রভাব বুঝতে সাহায্য করবে। এবং মানুষের জীবন বাঁচাতেও সাহায্য করবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকদলে যাঁরা ছিলেন
গবেষকদলের অন্য সদস্য হলেন মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লাল বিয়াকজুয়ালা এবং লাল মুয়ানসাঙ্গা এবং উমরোইয়ের সিদ্ধার্থ দালাল। তাঁরা নতুন প্রজাতির বর্ণনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এই সন্ধানের ব্যাপারে প্লস ওয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।