২০২১ সালের প্রথম সূর্যগ্রহণ (Surya Grahan 2021) ১০ জুন। ইতিমধ্যেই বছরের প্রথম চন্দ্রগ্রহণ (Chandra Grahan 2021) হয়ে গিয়েছে। গ্রহণ নিয়ে নানা ভ্রান্ত ধারণা, সংস্কার বিশ্বে বহু প্রাচীন। সিন্ধু সভ্যতা, মিশরীয় কিংবা ব্যাবিলন-- প্রাচীন সব সভ্যতাতেই সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণকে (Solar Eclipse 2021) অশুভ বলেই আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মেও গ্রহণকে নানা অশুভ, কুলক্ষণের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। যদিও এটি নিছকই একটি মহাজাগতিক বিজ্ঞান। মহাজাগতিক বিস্ময় বললেও অত্যুক্তি হয় না। তা এই গ্রহণেরও কিন্তু ইতিহাস রয়েছে।
আরও পড়ুন: Surya Grahan 2021: সূর্যগ্রহণ ও শনি জয়ন্তী একই দিনে! ঘুরে দাঁড়াতে চাইলে পড়ুন
গ্রহণের ইতিহাস
শুনতে একটু অবাক লাগছে। গ্রহণের আবার ইতিহাস কী! প্রাচীন ব্যাবিলনে গ্রহণের পূর্বাভাস দিতে পারতেন সে যুগের জ্যোতির্বিদরা। প্রাচীন চিনেও গ্রহণের পূর্বাভাসের প্রমাণ মিলেছে। খ্রিস্টের জন্মের আড়াই হাজার বছর আগে।
শাসকের স্বাস্থ্য কেমন থাকবে, তার জন্যই চিনে জ্যোতিষী গ্রহণের গণনা করতেন। খ্রিস্টপূর্ব ২১৩৪ সালে অক্টোবর মাসে একটি সূর্যগ্রহণ হয়েছিল। তার পূর্বাভাস দিতে পারেননি জ্যোতিষীরা। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, বিশ্বের প্রাচীনতম সূর্যগ্রহণ, মানব ইতিহাসে রেকর্ড হওয়া, ১২০৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ২২ অক্টোবর। বাইবেলে এর উল্লেখ আছে। গ্রহণ নিয়ে অন্ধবিশ্বাসও কম ছিল না।
২ অগাস্ট, ১১৩৩ সালে সূর্যগ্রহণের খানিক পরেই ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম হেনরির মৃত্যু হয়, তাতে কুসংস্কারের বিশ্বাস আরও মজবুত হয়। গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরোডোটাসের মতে, খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৫ সালের একটি সূর্যগ্রহণ থামিয়ে দিয়েছিল লিডিয়ান এবং মেডিসদের মধ্যে যুদ্ধ। অন্ধকার আকাশকে একে অপরের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের লক্ষণ হিসাবে দেখত এরা।
ড্রাগনরা সূর্যকে গিলে নেয়
হিন্দু ধর্মে যেমন রাহু সূর্য ও চন্দ্রকে গ্রাস করে বলে উল্লেখ রয়েছে, তেমনই প্রাচীন চিনের বিশ্বাস ছিল, ড্রাগনরা একজোট হয়ে সূর্য ও চন্দ্রকে গিলে নেয়। তাই ড্রাগনদের ভয় দেখাতে সে সময় দেদার বাদ্যযন্ত্রণ বাজানো হত। ইহুদি মতে মানুষের পাপের ফল এই গ্রহণ। ঈশ্বর বারবার মানুষকে সতর্ক করে, সূর্য ও চন্দ্রকে ঢেকে দিয়ে। তাই গ্রহণ মানবজাতির কুলক্ষণ। খ্রিস্টান ধর্মে গ্রহণকে ঈশ্বরের অলৌকিক কর্ম হিসেবেই বর্ণনা করা আছে। বাইবেলে রয়েছে, ঈশ্বর বলছেন, আমিই সূর্য ও চন্দ্রকে অস্তমিত করব, পৃথিবীকে দিনদুপুরে অন্ধকার করব।