ভারতীয় দলের তারকা স্পিন অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ভক্ত ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের চমকে দিয়েছেন। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে তৃতীয় টেস্ট শেষ হওয়ার পরপরই বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) অশ্বিন অবসরের ঘোষণা করেন। এবার অশ্বিনের অবসর নিয়ে একটা বড়ো তথ্য এসেছে। যদি রিপোর্ট বিশ্বাস করা হয়, অশ্বিন এক মাস আগেই অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি টিম ম্যানেজমেন্টকে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়া সফরে প্লেয়িং-১১-এ জায়গা না পেলে এবং দলে তাঁর প্রয়োজন না হলে অবসর নেওয়াই ভাল।
ভারতীয় দল অক্টোবর-নভেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩টি টেস্ট ম্যাচের হোম সিরিজ খেলেছিল। এতে ৩-০ গোলে ক্লিন সুইপ করে কিউই দল। এই হারের পরই নভেম্বরের শুরুতে অবসরের এই পরিকল্পনা করেছিলেন অশ্বিন। অশ্বিন বুঝতে পেরেছিলেন যে ভারতীয় দলে এখন তাঁর আর জায়গা নেই। অস্ট্রেলিয়া সফরে পার্থ টেস্টের পর অধিনায়ক রোহিত শর্মাকেও একই প্রশ্ন করেছিলেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, দলে আমার প্রয়োজন না হলে অবসর নেব।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচটি পার্থে হয়েছিল, যেখানে রোহিতের অনুপস্থিতিতে জসপ্রিত বুমরা অধিনায়কত্ব করেছিলেন। এই ম্যাচে জায়গা পাননি অশ্বিন। যদি রিপোর্ট বিশ্বাস করা হয়, এখানেই অশ্বিন অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে দলে ফিরেই গোলাপি বলের টেস্টের জন্য অশ্বিনকে রাজি করান রোহিত এবং তাঁকে প্লেয়িং-১১-এ রাখেন। সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানিয়েছেন রোহিত নিজেই। অশ্বিনও অস্ট্রেলিয়া যেতে চাননি বলে মনে করা হচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হোম সিরিজ থেকেই অবসরের চিন্তা মাথায় ছিল। এই সিরিজে ভারতকে ০-৩ ব্যবধানে হারের মুখে পড়তে হয়েছে। অশ্বিন টিম ম্যানেজমেন্টকে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে প্লেয়িং-১১-এ জায়গা না পেলে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন না। পার্থে অশ্বিনের বদলে ওয়াশিংটন সুন্দর খেলেছিলেন। তারপরে রোহিতের অনুরোধে পিঙ্ক বলের টেস্টের জন্য খেলতে রাজি হন অভিজ্ঞ অফ-স্পিনার। রবীন্দ্র জাদেজাও ব্রিসবেন টেস্টে খেলেছিলেন।
পরবর্তী সুযোগ পেতে ১০ মাস সময়
ভারতের পরবর্তী টেস্ট সিরিজ ইংল্যান্ডে (জুন থেকে আগস্ট), যেখানে ভারত হয়তো দুজনের বেশি স্পেশালিস্ট স্পিনার নিতে পারবে না, যারা ব্যাটসম্যানও। ভারতের পরবর্তী হোম টেস্ট সিরিজ আগামী বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে। ১০ মাস একটি দীর্ঘ সময় এবং একবার এই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ হলে সবার চোখ ২০২৭ এর দিকে থাকবে। তখন অশ্বিনের বয়স হবে ৪০ বছর। ততদিনে ভারতীয় ক্রিকেটে পরিবর্তনের পর্যায় শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পার্থে তাঁর বদলে সুন্দরকে খেলানোর সিদ্ধান্ত অশ্বিনীকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। অশ্বিন হয়তো অনুমান করতে পেরেছিলেন পরবর্তীতে কী ঘটতে চলেছে। অশ্বিন শুধুমাত্র একটি রিজার্ভ খেলোয়াড়ের মতো ড্রেসিংরুমে বসে থাকতে চান না। তাই সময় থাকতেই সরে দাঁড়ালেন।