World Cup 2023 Final: ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে রোহিত ব্রিগেডকে পরাস্ত করল অজিরা। রবিবার আমেদাবাদে ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের ট্রফি দখল করে অস্ট্রেলিয়া। ট্র্যাভিস হেডের ১৩৭ রানের সেঞ্চুরির ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ৪৩ ওভারে ভারতের ২৪১ রানের টার্গেটে পৌঁছে যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক টিম ইন্ডিয়ার হাত থেকে ম্যাচটি বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণ কী ছিল।
আগের সমস্ত ম্যাচের মতো, অধিনায়ক রোহিত শর্মা ফাইনালেও দ্রুত রান তুলতে শুরু করেছিলেন। রোহিত ৩১ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় দ্রুত ৪৭ রান করেন। রোহিতকে সমর্থন করে, কোহলিও গিয়ার আপ করেন। মিচেল স্টার্ককে এক ওভারে টানা তিনটি চার মারেন। কিন্তু রোহিত শর্মা আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিংয়ে যেন ধস নামে।
ম্যাচ কোথায় ফস্কে গেল?
রোহিত শর্মা প্যাভিলিয়নে যেতেই বাউন্ডারির জন্য আকুল হয়ে ওঠে টিম ইন্ডিয়া। ১১ থেকে ৪০ ওভারের মধ্যে ব্যাটসম্যানরা মাত্র দু'টি চার মারেন। ২৭ তম ওভারে একটি মাত্র চার আসে কে এল রাহুলের ব্যাট থেকে। বাকি অপর চার আসে ৩৯তম ওভারে, সূর্যকুমার যাদবের ব্যাট থেকে। এই সময়ে টিম ইন্ডিয়ার রান রেট ছিল ৫-এরও কম।
সুনীল গাভাস্কার জানিয়েছেন, টিম ইন্ডিয়ার পারফরম্যান্সে তিনি সম্পূর্ণ খুশি হতে পারছেন না। স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে কথা বলার সময় সুনীল গাভাস্কার বলেন, 'কোহলি এবং রাহুল তাঁদের পার্টনারশিপের সময় পার্টটাইম বোলারদের টার্গেট করেননি।' তাঁর বিশ্বাস, দু'জনেই যদি বাউন্ডারি মারার চেষ্টায় না নেমে পড়তেন, সেক্ষেত্রে বেশি বেশি করে সিঙ্গেল নিয়ে রান তুলে দেওয়া যেত। এভাবে একটু চেষ্টা করলেই ২৭০ রানের টার্গেট দিতে পারত।
সুনীল গাভাস্কার বলেন, মিচেল মার্শ ২ ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়েছেন। দুই ওভারে মাত্র ৪ রান দেন ট্র্যাভিস হেড। আমার মনে হয় এই ওভারগুলিতেই ব্যাটসম্যানরা পার্ট টাইম বোলারদের টার্গেট করতে পারতেন। আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে আমরা সহজেই ২০-৩০ রান যোগ করতে পারতাম। এভাবে আমাদের স্কোর ২৪১-এর পরিবর্তে ২৬৫ বা ২৭০ রান হতে পারত।
কোথায় ভুলটা হয়েছিল জানালেন শেহওয়াগ
ক্রিকবাজকে টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ওপেনার বীরেন্দ্র শেহওয়াগও একই কথা বলেছেন। শেহওয়াগ বলেন, '২৫০ রানের টার্গেট মাথায় রেখে কোহলি ও রাহুল খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছিলেন। যেখানে তাদের পার্টনারশিপের সময় আরও কয়েকটা সিঙ্গেল নিয়ে টার্গেট বাড়ানো যেত। দ্বিতীয় পাওয়ার প্লেতে ব্যাটসম্যানরা কোনও সুযোগই নেয়নি। এদিকে তখন সার্কেলের ভিতরেই ৫ জন ফিল্ডার ছিলেন। এখানে বাউন্ডারি না মারলেও ৪-৫ রান সহজেই তুলে নেওয়া যেত।
কেএল রাহুল ৬৬ রান করতে ১০৭ বল খরচ করেন। ফাইনালে টিম ইন্ডিয়া এই সকল কারণেই হেরে যায়। ফাইনালে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ক্যাঙ্গারুদের পেস আক্রমণ প্রথম থেকেই টিম ইন্ডিয়াকে চাপে ফেলে দেয়। প্রথমে মিচেল স্টার্ক ৪ রানে শুভমান গিলকে ক্রিজ থেকে সরিয়ে দেন। এরপর ক্যাচ আউট হন অধিনায়ক রোহিত। ৪ রানে প্যাট কামিন্সের শিকার হন শ্রেয়ার আইয়ার।
এর পর কোহলি এবং কেএল রাহুল টিম ইন্ডিয়ার বিপর্যস্ত ইনিংসকে কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যান। দু'জনে মিসে মধ্যে ১০৯ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু এরপর ৫৪ রানে কোহলিকে বোল্ড করে দেন প্যাট কামিন্স। কিছুক্ষণ পর স্টার্কও ৬৬ রানে রাহুলকে সরিয়ে দেন। ১৮ রান করেন সূর্য কুমার। শামি (৬), বুমরাহ (১), কুলদীপ (১০) এবং সিরাজ ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।