ফুটবলের রাজপুত্র আর নেই। গতকাল রাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণেই নাকি এমন ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতে না আসতেই গোটা ফুটবল বিশ্ব কার্যত শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে।
মারাদোনার মৃত্যুর খবর পেয়ে ব্যথিত হন আসানসোলের মোম ভাস্কর্য় শিল্পী সুশান্ত রায়। তিনি বলেন, আমরা অসময়ে ফুটবলের ঈশ্বরকে হারালাম।
সালটা ছিল ২০০৮। কলকাতায় এসেছিলেন দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। তৎকালীন ক্রীড়া ন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী সুশান্ত রায়কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন মারাদোনার একটি মোমের মূর্তি তৈরি করতে। কিন্তু হাতে তখন মাত্র ১৮ দিন সময় রয়েছে। শিল্পী জানান, এত কম সময়ে মূর্তি তৈরি করা কার্যত অসম্ভব একটা ব্যাপার। কারণ দেড় মাসের নিচে কোনও মোমের মূর্তি তৈরি করা যায় না। তবুও মনের জোর এবং অদম্য ই্চ্ছায় ১৫ দিনের মাথায় মোমের মূর্তির কাজ শেষ হয়। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সেই মূর্তিটি শিল্পীর হাতে দিয়েই তুলে দেওয়া হয় মারাদোনার হাতে। এরপর দোভাষির মাধ্যমে তিনি অসংখ্য ধন্যবাদ জানান শিল্পী সুশান্ত রায়কে।
সুশান্ত রায়ের আক্ষেপ, ওই মূর্তিটি আর্জেন্টিনা নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, সুভাষ চক্রবর্তী হঠাত করে মারা যাওয়ায় মোমের ওই মূর্তিটি শিল্পীর কাছেই থেকে যায়। বর্তমানে মারাদোনার হাতে ছোঁয়া ওই মূর্তিটি কলকাতার ওয়াক্স মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।
উল্লেখ্য ২০০৮ সালে সল্টলেক স্টেডিয়ামে মারাদোনাকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। একটি প্রীতিম্যাচের আগে কলকাতার দর্শকরা ১০ মিনিটের জন্য এই আর্জেন্টাইন তারকার পায়ের জাদু দেখতে পান। মাঠ থেকেই সোজা মাদার হাউসে গিয়ে মাদার টেরেজার সমাধিতে শ্রদ্ধাও জানিয়েছিলেন তিনি।
গতকাল না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন ফুটবলের রাজপুত্র। শিল্পী সুশান্ত রায় জানালেন, এই বলটা নিয়েই বেশ কয়েকবার ড্রিবলিং করেছিলেন মারাদোনা। আজ সেই স্মৃতিগুলোই একের পর এক মনের কোনে জমা হচ্ছে।