৬ মার্চ, ২০২১। অর্থাৎ আজকের দিনেই ভারতীয় ক্রিকেটে ৫০ বছর পূরণ করলেন দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাভাসকার। বিগত পাঁচ দশক ধরে বিভিন্ন ভূমিকায় তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রয়েছেন। ৭০-এর দশকে যখন বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন যখন 'জঞ্জির' এবং 'দিওয়ার'-এর মতো সিনেমায় মুম্বইয়ের সিনেমা জগতে নিজের মাটি শক্ত করছিলেন, কিশোর কুমার যখন তাঁর গানে আসমুদ্রহিমাচল মাতাল করে তুলেছিলেন, ঠিক সেইসময় উঠে এসেছিলেন ভারতের তারকা ক্রিকেটার সুনীল মনোহর গাভাসকার। দেশের তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা কাঁধে নিয়ে এগিয়ে চলেছিলেন। অবলীলায় অতিক্রম করছিলেন একের পর এক চ্যালেঞ্জ।
(ছবি সৌজন্য - বিসিসিআই)
টেস্ট ক্রিকেটে পা রাখার পর আজ ৫০ বছর তিনি অতিক্রম করে ফেললেন। এই উপলক্ষ্যে তিনি বললেন, সেই অভিষেকের দিনের কথা আজও তাঁর মনে আছে। পোর্ট অফ স্পেনে আয়োজিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল সুনীল গাভাসকারের। সেদিনের সেই তরুণ ক্রিকেটার যে একদিন ইতিহাস তৈরি করবেন, সেটা বোধহয় কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। জীবনের প্রথম টেস্ট সিরিজ়ে অমন আক্রমণাত্মক ক্যারিবিয়ান বোলিং ব্রিগেডের সামনে তিনি ৭৭৪ রান করেছিলেন। গাভাসকার গোটা টেস্ট কেরিয়ারে মোট ১০,১১২ রান করেন। এরমধ্যে ৩৪চি সেঞ্চুরি রয়েছে।
(ছবি সৌজন্য - বিসিসিআই)
উইকেটকিপার ছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে সবার আগে ১০০টি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ডও সুনীল গাভাসকারের দখলে ছিল। গতকাল সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, "বচ্চন সাহেব আজও গোটা দেশের কাছে একজন মহান আইকন। প্রয়াত কিশোরকুমার তো চিরসবুজ। এদেরকে কখনও ভোলা সম্ভব নয়। সেকারণে আপনি যদি আমাদের ওঁদের সঙ্গে আমাকে একই তালিকায় রাখেন, তাহলে এর থেকে বড় আনন্দ আমার কাছে আর কিছুই হতে পারে না।"
(ছবি সৌজন্য - বিসিসিআই)
তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে পোর্ট অফ স্পেনে যখন অভিষেক টেস্ট ম্যাচে তাঁকে ক্যারিবিয়ান বোলিং ব্রিগেডের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, তখন অনুভূতিটা কেমন ছিল। জবাবে তিনি বললেন, "সবার আগে তো দেশের হয়ে ওই টুপিটা পরে সবথেকে বেশি আনন্দ হয়েছিল। খানিকটা নার্ভাসও ছিলাম। কারণ আমরা সেই দলের বিরুদ্ধে খেলছিলাম, যে দলটাকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মহানতম ক্রিকেটার গ্যারি সোবার্স।"
(ছবি সৌজন্য - বিসিসিআই)
ডেবিউ টেস্ট সিরিজ়ে ৭৭৪ রান করার পর সুনীল গাভাসকারকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। আজ যখন তিনি পিছন ফিরে তাকান, তখন মনে হয় যে ৪০০ রান করলেও বোধহয় একইরকম খুশি হতেন। তিনি বললেন, "অবশ্যই এই অনুভূতিটা যথেষ্ট ভালো ছিল। আমি যদি ৩৫০ থেকে ৪০০ রানও করতাম, তাহলেও এই একইরকমভাবে খুশি হতাম।"
(ছবি সৌজন্য - রয়টার্স)
এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, ১৯৭১ সালের ৬ মার্চ ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল সুনীল গাভাসকারের। অভিষেক টেস্ট ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তিনি ৬৫ রান করেন এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন। দুটো ইনিংসেই তিনি হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন।
(ছবি সৌজন্য - বিসিসিআই)