২১ বছর আগে আশিয়ান কাপ (Asean Cup) জিতে দেশে ফিরেছিল সুভাষ ভৌমিকের (Subhash Bhowmick) ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। এতদিন পরে সেই স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সেই সময়ের তারকা ফুটবলাররা। আজও তাদের চোখের কোনা ভিজে যায়। ঠিক কীভাবে ঘটেছিল এই স্বপ্নপূরণ? কোন ভোক্যাল টনিকে বিদেশের মাটিতে ফাইনালে প্রবলতর প্রতিপক্ষ বেকতেরো সাসানাকে বেগ দিয়েছিল লাল-হলুদ? শোনা যায় নানা গল্প। ফাইনালের আগে চাপে থাকা দলের ফুটবলারদের উদ্বুদ্ধ করতে তিন ঘন্টা টানা বক্তৃতা দিয়েছিলেন কোচ সুভাষ। এরপর ঘটে দারুণ মজার এক ঘটনা।
তিন ঘন্টা ক্লাস করিয়েছিলেন সুভাষ
ফাইনাল ম্যাচের আগে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা। দলের ফুটবলাররা টেনশনে ঠিকভাবে রাতে ঘুমতে পারেননি। এটা কোনও ভাবে বুঝে গিয়েছিলেন সুভাষ। আর তা বুঝতে পেরেই চাপ কাটাতে আসরে নেমে পড়েন ইস্টবেঙ্গলের সবচেয়ে সফল কোচ। তিন ঘন্টা ধরে ফুটবলারদের ক্লাস নেন সুভাষ। লাঞ্চের পর এই তিন ঘণ্টার সেই ক্লাসে চাপ কেটে গিয়েছিল ফুটবলারদের। আর তার জেরেই মাঠের মধ্যে সেরাটা দিতে পেরেছিলেন ফুটবলাররা।
লেফট ব্যাক পজিশনে ফুটবলার ছিল না ইস্টবেঙ্গলের
ফাইনালের আগে ইস্টবেঙ্গল দলে লেফট ব্যাক পজিশনে কোনও ফুটবলার ছিলেন না। টিম মিটিং-এ সুভাষ বলেন, আমার দলে একটা পজিশনে কোনও ফুটবলার নেই। কে খেলতে পারবে? কোন পজিশন তা না জেনেই হাত তুলে দেন ষষ্ঠী দুলে। সুভাষও অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেন, 'লেফটব্যাকে খেলতে পারবে? এশিয়ার সেরা প্লেয়ার চাইম্যানকে আটকাতে পারবে?' উত্তর দিতে গিয়ে আবারঅবাক করে দেন ষষ্ঠী। কোনও দ্বিধা না রেখেই বলেন, 'আমি আটকে দেব। তবে আমাকে ভাত জোগাড় করে দিতে হবে' আবদার মেটার পরে ম্যাচে জিনেদিন জিদানের (Zinedine Zidane) সঙ্গে খেলা চাইম্যানকে সত্যিই আটকে দিয়েছিলেন ষষ্ঠী। শুধু তাই নয়, তারকা ফুটবলারকে রীতিমত স্লেজ করেছিলেন বাংলার ফুটবলার। যে উক্তি এখনও লাল-হলুদ জনতার মনে টাটকা। তিনি বলেছিলেন, 'ইউ চাইম্যান, আই অ্যাম ষষ্ঠী দুলে।' শুধু ইস্টবেঙ্গল জনতা কেন? চাইম্যানও বোধহয় সারা জীবনে ভুলতে পারবেন না এই উক্তি।
বৃহস্পতিবার তাঁবুতে আশিয়ান জয়ের ২১ বছর পালন করতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। হবে অনুষ্ঠানও। আশিয়ান পরেও ইস্টবেঙ্গলের ট্রফি ক্যাবিনেটে আরও অনেক ট্রফি যোগ হয়েছে। তবে আশিয়ান সবসময়ই স্পেশাল লাল-হলুদ জনতার কাছে।