
হাতে মাত্র আর কয়েকঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরেই শুরু হতে চলেছে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের মহাযুদ্ধ। প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি নামতে চলেছে ATK মোহনবাগান এবং কেরালা ব্লাস্টার্স FC। একদিকে ATK মোহনবাগান যেমন শক্তিনির্ভর দল, তেমনই কিবু ব্রিগেডের থেকে আজ আমরা শৈল্পিক নিদর্শনের ছোঁয়া দেখতেই পারি। ইতিপূর্বে দু'বার আইএসএল খেতাব জয় করেছে অ্যাটলেটিকো ডি'কলকাতা। আজ সেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ দেখা যেতেই পারে। আন্তোনিও লোপেজ় হাবাস স্প্যানিশ কোচ হলেও তাঁর মধ্যে জার্মানি এবং ইট্যালি ঘরানার এক সুন্দর মিশ্রণ দেখতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে, কিবু আবার ছোটো ছোটো পাসে ফুটবল খেলতেই বেশি স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ইতিপূর্বে আই লিগ চলাকালীন জোসেবা বেইতিয়ারা পাসিং ফুটবল খেলেই অধিকাংশ বিপক্ষকে কাবু করে দিয়েছিলেন। আজও সেই নমুণা কি দেখতে পাওয়া যাবে আইএসএল ময়দানে? সেই উত্তরটা আপাতত সময়ই দেবে।
একথা আপনারা সকলেই জানেন যে গত মরশুমে এই কিবু ভিকুনার কোচিংয়েই মোহনবাগান আই লিগ জয় করেছিল। আই লিগ ছেড়ে ISL-এর পথে পা বাড়িয়েছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। হাত ধরেছে অ্যাটলেটিকো ডি'কলকাতার। নামের পাশাপাশি বদল হয়েছে দলের কোচও। ATK মোহনবাগান দলের নতুন কোচ হয়েছেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। এদিকে কিবুর জীবনও থেমে থাকেনি। আসন্ন ISL-এ কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি'কে কোচিং করাচ্ছেন তিনি। আগামীকাল এই দুটো দলই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে একে অপরের বিরুদ্ধে নামতে চলেছে। এরথেকে বড় ট্র্যাজিক পোয়েটিক জাস্টিস আর কীই বা হতে পারে!
এদিকে আবার হাবাসের কোচিংয়েই দু'বার ইন্ডিয়ান সুপার লিগ খেতাব জয় করেছে অ্যাটলেটিকো ডি'কলকাতা। মাঠে বল গড়ানোর একদিন আগেই তিনি বললেন, "মোহনবাগানের হয়ে যথেষ্ট ভালো কাজ করেছেন কিবু ভিকুনা। কিন্তু এবছরের প্রতিযোগিতাটা একেবারে আলাদা। আলাদা একটা মরশুম। ওনার প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা রয়েছে। তবে আগামীকালের ম্যাচে আমরা তিন পয়েন্টের লক্ষ্যেই মাঠে নামব। আমরা প্রত্যেকদিন সেই লক্ষ্যেই অনুশীলন করি।"
যদি খাতায়-কলমে বিচার করা হয়, আজকের ম্যাচে দলীয় ভারসাম্যের দিক থেকে কেরালা ব্লাস্টার্সের থেকে ATK মোহনবাগান কিছুটা এগিয়েই থাকবে। গত মরশুমের অধিকাংশ ফুটবলারকেই এবারও এটিকে মোগনবাগান দলে দেখতে পাওয়া যাবে। দলের ডিফেন্সে প্রীতম কোটাল, প্রবীর দাসদের সঙ্গে এবার যোগ দিয়েছেন তিরি, সন্দেশ ঝিংগান এবং শুভাশিষ বসু। দলের মাঝমাঠ এবং আক্রমণভাগও যথেষ্ট শক্তিশালী। ইতিপূর্বে দলে তো ছিলেনই এডু গার্সিয়া, জ়াভি হার্নান্ডেজ়, জয়েশ রানে, মাইকেল সুসাইরাজ এবং প্রণয় হালদার। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন শেখ সাহিল এবং গ্লেন মার্টিন্স। সবশেষে আক্রমণভাগে রয়েছেন রয় কৃষ্ণা, ডেভিড উইলিয়ামস এবং মনবীর সিং।
একদিকে, হাবাস যেমন টুর্নামেন্ট শুরু আগে দল নিয়ে কোনও অনুশীলন ম্যাচে নামতে চাননি, অন্যদিকে তেমন এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে ৩-১ গোলে পরাস্ত হয়েছে কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি। আশা করা যায়, অনুশীলন ম্যাচের প্রভাব আজকের মূল পর্বে হয়ত পড়তে দেবেন না কিবু। আজ দলের অ্যাটাকিং সাইডের দায়িত্ব সামলাতে পারেন গ্যারি হুপার, ফাকুন্দো পেরেরা এবং জর্ডান মারে। দলের মিডফিল্ডে প্রধান ভরসা হলেন সের্খিও সিদোঞ্জা, নওরেম, আবিদুল সামাদ এবং কেপি রাহুল।
গতকাল অনুশীলনের পর কিবু বলেছেন, "আমার হৃদয়ে এখনও মোহনবাগানের প্রতি যথেষ্ট আবেগ রয়েছে। ওখানকার ক্লাব কর্তারা আমার সঙ্গে যথেষ্ট ভালো ব্যবহার করেছেন। এখনও আমার সঙ্গে প্রত্যেকের ভালো সম্পর্ক বজায় আছে। তবে কেরালা ব্লাস্টার্স দলে এসেও আমি যথেষ্ট খুশি। এখানকার মানুষও আমাকে যথেষ্ট ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন। আশা করছি, আগামীকাল নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে পারব।"
এবার শেষ হাসি কোন দল হাসে, এখন সেটাই দেখার।