ISL East Bengal Beats North East: মরশুমের শুরুটা দুর্দান্ত করেও হঠাৎ যেন কোনও কারণে খেই হারিয়ে ফেলেছিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। পরপর হারে মনোবল দুমড়ে গিয়েছিল লাল-হলুদ বাহিনীর। কেন এমন হয়েছে তার জবাব ছিল না কারও কাছেই। শুধু আশা ছিল হয়তো ঘুরে দাঁড়াবে। ঘুরে দাঁড়ালো তো বটেই, বরং প্রবল গতি আর ক্যারিজমায় নর্থ ইস্টকে ছিন্নভিন্ন করে দিল। আইএসএলে প্রথম ম্যাচে ড্র দিয়ে শুরু করেছিল, দ্বিতীয় ম্যাচে জয় আসে। যেখান থেকে পিক-এ উঠবে দল বলে মনে করা হচ্ছিল, সেখান থেকে নিম্নগামী হয়েছে গ্রাফ। নামতে নামতে ৯ নম্বরে এসে দাঁড়িয়েছিল দল। এই পরিস্থিতিতে আরেকটা হার মানে অতলে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সেখান থেকেই ইস্টবেঙ্গল প্রমাণ করল এভাবেও ফিরে আসা যায়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার রোষের মুখে পড়তে হল উত্তর-পূর্ব ভারতের এই দলটিকে।
প্রথমার্ধে ২-০ তে এগিয়ে গিয়েছিল লাল-হলুদ বাহিনী। তবে খেলা হয়েছিল তুল্যমূল্য। এরপর আশা করা গিয়েছিল নর্থ-ইস্ট খেলায় ফেরার চেষ্টা করবে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল খেলার শুরুর দিকেই ৩ নম্বর গোলটি করে ফেলার পর হঠাৎই খেলা থেকে হারিয়ে গেল তারা। পরপর গোলে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তখন লাল-হলুদ ওয়েভ। শেষ পর্যন্ত খেলার ফল ছিল ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে ৫-০।
এদিন জয়ের জন্য মরিয়া ছিল ইস্টবেঙ্গল। তেড়েফুঁড়ে খেলা আরম্ভ করে তারা। ৩ মিনিটের মাথায় সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেনি তারা। ১০ মিনিটেও সুযোগ এসেছিল। যদিও গোলের জন্য ইস্টবেঙ্গলকে বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি লাল-হলুদদের। ১৪ মিনিটে পিভি বিষ্ণুর বাড়িয়ে দেওয়া বল ধরে গোল করেন বোরহা হেরেরা। এর ১০ মিনিট পরেই ম্যাচের তখন ২৪ মিনিট, দলের ব্যবধান বাড়িয়ে নেন অধিনায়ক। বাঁ দিক থেকে মন্দারের ভাসানো বলে মাথা ছুঁইয়ে দিতে ভুল করেননি ক্লেইটন সিলভা। প্রথমার্থে আর কোনও গোল হয়নি।
প্রথমার্ধে ২ গোল করার পর দ্বিতীয়ার্ধে আর নর্থ ইস্টকে ম্যাচে ফেরার আর কোনও সুযোগ দেননি ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। ম্যাচের ৬২ মিনিটে নন্দকুমার গোল করে দলের হয়ে ৩-০ করে ফেলার পর ম্যাচের ভবিষ্যত তখনই লেখা হয়ে গিয়েছিল। দেখার ছিল নর্থ ইস্ট শেষ পর্যন্ত কী জবাব দিতে পারে কিংবা ইস্টবেঙ্গল ব্যবধান আর বাড়াতে পারে কি না। যদিও দ্বিতীয়টিই হয়েছে। ৬৬ মিনিটে দলের চতুর্থ এবং নিজের দ্বিতীয় গোল করেন অধিনায়ক ক্লেইটন। খেলার আর বাকি কিছু ছিল না। তবে ৮১ মিনিটে মহেশের পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের পঞ্চম গোল করেন নন্দকুমার। এর পর আর ক্লেইটন, মহেশকে মাঠে রাখেননি ইস্টবেঙ্গল কোচ। খেলা শেষ হওয়ার ২ মিনিট আগে পেনাল্টি পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি নর্থ ইস্ট।
নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের সমস্য়া ছিল ধারাবাহিকতা। সেটাই ডোবালো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। বিশেষ করে অ্যাওয়ে ম্যাচের ক্ষেত্রে। তারা কখনও তেমন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। এই ম্যাচের আগে ২০টি অ্যাওয়ে ম্যাচে ৫ টি ড্র এবং বাকি ১৫ ম্যাচেই হেরেছিল নর্থ ইস্ট। আইএসএলের ইতিহাসে এ রকম খারাপ রেকর্ড আর কোনও টিমের নেই। আর সেখানেই ফোঁকর গোলে নিজেদের প্রত্যাবর্তনকে সোনার হরফে লিখিয়ে নিল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল।