পাঁচ ম্যাচের সিরিজের ফয়সলা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ পকেটে পুরে নিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। ফলে নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়িয়েছে পঞ্চম টেস্ট ম্যাচ। আগামী ৭ মার্চ ধর্মশালায় মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-ইংল্যান্ড। সিরিজে ইতিমধ্যেই ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে ভারতীয় দল। এই ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হল, তিন ফাস্ট বোলার নাকি তিন স্পিনার খেলানো হবে। প্রথম চারটি টেস্ট ম্যাচে ৩ স্পিনার নিয়ে খেলেছে রোহিতরা।
ধর্মশালার পিচ ভারতের অন্যান্য মাঠের তুলনায় পেসারবান্ধব। এই পিচ দ্রুতগতির এবং বাউন্সি। তাই কুলদীপ যাদবকে খেলানো নিয়ে বিভ্রান্তিতে টিম ইন্ডিয়া। রোহিত শর্মাদের মাথায় আছে, ৩ সপ্তাহ আগে খেলা একটি রঞ্জি ম্যাচ। দিল্লি বনাম হিমাচলপ্রদেশের ওই ম্যাচে চার দিনে ৩৬টি উইকেট পড়েছিল। সবগুলিই গিয়েছিল পেসারদের পকেটে।
চলতি রঞ্জি মরসুমে মোট ৪টি ম্যাচ খেলা হয়েছে ধর্মশালায়। ফাস্ট বোলাররা মোট ৮১৪ ওভার বল করেছেন। ২৩.১৭ গড়ে নিয়েছেন ১২২ উইকেট। স্পিনাররা ১২২.২ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৫৮.৪২ গড়ে ৭ উইকেট নিয়েছেন। যা ভারতের যে কোনও ভেন্যুতে চমকে দেওয়ার মতো পরিসংখ্যান। কারণ ভারতের মাটিতে স্পিনাররই সুবিধে পায়। এ কারণে এই ম্যাচে কুলদীপ যাদবের বসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর জায়গায় নামবেন জসপ্রীত বুমরা। দলের প্রধান স্পিনার হবেন রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। বুমরার নেতৃত্বে পেস আক্রমণে থাকবেন মহম্মদ সিরাজ এবং আকাশ দীপ।
ধর্মশালায় ৪৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে স্পিনারদের গড় ৪১.০২। ফাস্ট বোলারদের গড় ২৭.৯০। ধর্মশালায় শুধুমাত্র একটি আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়েছে। ধর্মশালায় ২০১৭ সালের মার্চ মাসে শেষবার বসেছিল আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তৃতীয় ইনিংসে (অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস) উমেশ যাদব নতুন বলে ধসিয়ে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলীয় ব্যাটিংকে। ৩০টির মধ্যে ১৮টি উইকেট নিয়েছিলেন স্পিনাররা। ওই ম্যাচেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল কুলদীপ যাদবের। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। ভারতের প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন নাথান লায়ন। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা ছয় উইকেট নেন। সেই টেস্ট ম্যাচের আগে পিচ ছিল সবুজল কিউরেটর বলেছিলেন, এই পিচে ফাস্ট বোলিং, স্পিন, ব্যাটিং, ফিল্ডিং-সব কিছুর জন্য রসদ মজুত থাকবে।
ধর্মশালার পিচ কেমন হবে? বৃহস্পতিবার ম্যাচের প্রথম দিনে বৃষ্টির সম্ভাবনাও আছে। ক্রিকইনফো-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ধর্মশালার পিচ দ্রুতগতির এবং বাউন্সি। মেঘলা আকাশ থাকলে বল সুইংও করবে। টেস্ট ম্যাচের অন্তত কয়েকটি সেশন সুইং সামলাতে হবে ব্যাটারদের। ফাস্ট বোলাররা প্রভাব ফেলতে পারেন। তবে স্পিনাররাও বাউন্স থেকে সুবিধে পাবেন। আউটফিল্ডটি সবুজ থাকায় রিভার্স সুইং হতে সময় লাগে।
ইংল্যান্ডের তিনজন ফাস্ট বোলার নিয়ে মাঠে নামতে পারে। কিন্তু ভারত অতিরিক্ত পেসার খেলাতে না-ও পারে। যে কোনও ভারতীয় পিচ সম্পূর্ণ গ্রিনটপ নয়। এই পিচটিও সে রকমই। অশ্বিন, জাদেজা এবং কুলদীপও উইকেট নিতে পারেন। ইংলিশরা সুইপ করলে উইকেট নেওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। এখানে ঠান্ডা আবহাওয়ায় ফাস্ট বোলাররা লম্বা স্পেলে বোলিং করতে পারেন। ভারতের জন্য প্রশ্ন হল. তৃতীয় পেসার আকাশ দীপ বা তৃতীয় স্পিনার নিয়ে মাঠে নামবে দল?
ধর্মশালায টেস্টের জন্য ভারতীয় দল: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), জাসপ্রীত বুমরাহ (সহ-অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমান গিল, রজত পতিদার, সরফরাজ খান, ধ্রুব জুরেল (ডব্লিউকে), কেএস ভরত (ডব্লিউকে), দেবদত্ত পাডিক্কল, আর. অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, মহম্মদ সিরাজ, মুকেশ কুমার, আকাশ দীপ।