ক্লাব ফুটবলে ডার্বি (Kolkata Derby) ম্যাচের গুরুত্ব সকলেরই জানা। কলকাতা ফুটবলে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের (East bengal vs Mohun Bagan) লড়াই ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো। তাই এই বিশেষ ম্যাচ নিয়ে প্রচুর গল্প প্রচলিত রয়েছে। এই ডার্বি ম্যাচে নানা ধরনের তুকতাক (superstition in derby match) করে থাকেন ফুটবলাররা। শুধু ফুটবলার বলা ভুল, সমর্থক, কোচিং স্টাফরাও তুকতাক করেন। তাঁদের বিশ্বাস এতে কাজ হয়। জিতে যায় প্রিয় দল।
আটের দশকে কাঠি চালাচালি করতেন মোহনবাগানের গোবিন্দরাজ
গোবিন্দরাজ কোনও ফুটবলার নন। আটের দশকে সবুজ-মেরুনের ম্যাসিও হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ধরা যাক, ইস্টবেঙ্গলের রাইট উইঙ্গার প্রয়াত সুরজিৎ সেনগুপ্ত দারুণ গতিতে উঠে আসছেন। গোল পেয়ে যেতে পারে ইস্টবেঙ্গল (East Brngal)। ঠিক সেই সময়ই গোবিন্দরাজ কাঠি চালাচালি করতেন। এতেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হতেন সুরজিৎ। এমনটাই ছিল বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: জুয়ানের ওপর আস্থা হারাচ্ছে এটিকে মোহনবাগান, দায়িত্বে কে আসছেন?
মটন স্টু খেয়ে,সিনেমা দেখে ডার্বি খেলতে নামতেন সমরেশ চৌধুরী
ডার্বির দিন বিরিয়ানি বা মটন স্টু খাওয়ার কথা ভাবতেই পারেন না এখনকার ফুটবলাররা। শুধু ডার্বি বলে নয়, ফিটনেসের দিকে নজর দিতে এই ধরনের খাবার থেকে নিজেদের অনেকটাই দূরে রাখেন এখনকার খেলোয়াড়রা। যদিও সমরেশ চৌধুরী, এ সবের ধার ধারতেন না। ডার্বির দিন নিউ এম্পায়ারে সিনেমা সাবিত্রি কেবিনে মটন স্টু খেয়েই মাঠে নামতেন তিনি। অন্যদিকে, ডার্বির দিন ডিমই খেতেন না আরেক প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম সরকার। সাধারণ ভাবে কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়, তাঁকে ডিম বা গোলাকার কিছু খেতে বারন করা হয়। বিশ্বাস গোলাকার কিছু খেলে পরীক্ষায় খারাপ ফল করতে পারে সেই পরীক্ষার্থী। ফুটবলার জীবনেও সেই মন্ত্রই মেনে চলেছেন গৌতম।
আরও পড়ুন: ISL-এর সবচেয়ে দামি দল মোহনবাগান, তা-ও পারফরম্যান্সে হতশ্রী দশা কেন?
অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন অধিনায়ক শ্যামল ঘোষ মাঠে ঢুকতেন ডান পা আগে রেখে। এটাই ছিল তাঁর বিশ্বাস। মোহনবাগান এর গোলকিপার প্রয়াত শিবাজী ব্যানার্জি গৃহদেবতার তুলসী মাথায় ছুঁইয়ে ডার্বি খেলতে নামতেন।
জামাকাপড় পরিবর্তন করতেন না পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়
ডার্বির দিনে প্রয়াত কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একই জামাকাপড় পরে মাঠে আসতেন। নীল রং-এর সেই শার্ট বহুল ব্যবহারে ছিঁড়ে গেলেও সেটা পরেই মাঠে আসতেন তিনি। ডার্বির দিনে নির্দিষ্ট জুতোও ছিল তাঁর। জুতোও ছিঁড়ে গিয়েছিল। তবুও তাপ্পি দিয়ে নির্দিষ্ট সেই জুতো পরেই আসতেন পিকে।
সাতের দশকে মোহনবাগান আর ইস্টবেঙ্গল -এর বড় ম্যাচের আগে একসঙ্গে কালীঘাটে পুজো দিয়েছিল দুই দলই। এক যাত্রায় সেবার পৃথক ফল হয়নি। ম্যাচটা আমীমাংষিত ভাবেই শেষ হয়েছিল। প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বড় ম্যাচের আগে ফিরিঙ্গি কালীবাড়িতে মাথা ছোঁয়াতেনই।