এ যেন বিস্ময় বালক! তবে তার বয়সের গণিত অনুযায়ী, এখনও বালক হয়নি সে। বয়স মাত্র ৩। এই বয়সে যে কোনও শিশুরই সঙ্গী খেলনা কিংবা কার্টুন দেখা। তবে সে যেন আর চার-পাঁচটা বাচ্চার থেকে একেবারে আলাদা। দাবার বোর্ডে তার ছোট্ট হাতগুলি যেভাবে দাপট দেখাল, তা দেখে যে কারও চোখ কপালে উঠবে। ৩ বছর ৮ মাস ১৮ দিনের অনীশ সরকারের কাণ্ডে বিস্মিত সকলে। সে দাবাড়ু। বিশ্বের কনিষ্ঠতম হিসেবে ফিডে রেটিং পেয়ে বিশ্বরেকর্ড করল কলকাতার অনীশ।
২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি জন্ম অনীশের। কলকাতার কৈখালিতে অনীশের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার। বাড়ির খুদে সদস্যের এহেন কীর্তিতে যারপরনাই খুশি তার বাবা-মা। ভারতের তেজস তিওয়ারির রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে অনীশ। রাজ্যের অনূর্ধ্ব ৯ দাবা প্রতিযোগিতায় রেটিংয়ে থাকা দুই দাবাড়ুকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে সে। আর এতেই ইতিহাস তৈরি করেছে অনীশ।
অনীশ এতটাই ছোট যে চেয়ারে বসে দাবার ঘুঁটি ঠিকমতো ধরতেও পারছে না। তাই চেয়ারের উপর হাঁটু মুড়ে বসে খেলতে হল তাকে। এত কম বয়সে দাবা খেলে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে।১৫৫৫ ফিডে এলো রেটিং পেয়েছে।
অনীশের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গ্র্যান্ডমাস্টার তথা তার কোচ দিব্যেন্দু বড়ুয়া। তিনি বলেছেন, ' ও আমায় মিত্রভা গুহকে মনে করাচ্ছে। অনীশের নিশ্চয়ই পারদর্শীতা রয়েছে। ওকে অনেক দূর এগোতে হবে।'
দাবাড়ু হিসাবে অনীশের পথচলা শুরু হয়েছিল ১ বছর আগে। অনীশের মায়ের কথায়, 'ওকে আমরা বিভিন্ন ধরনের ইউটিউব চ্যানেল দেখিয়েছিলাম, মূলত কার্টুনের। কিন্তু ওর নজর পড়ল দাবার ভিডিয়োতে।' তাঁর আরও সংযোজন, 'জানুয়ারিতে ওর আগ্রহ অনেকটাই বেড়ে গেল। সারাক্ষণ দাবার ভিডিয়ো দেখত। তারপরে ওকে দাবার বোর্ড, ঘুঁটি কিনে দিই। পরে আমরা ওকে দিব্যেন্দু স্যারের কাছে পাঠাই।' পুত্রের কীর্তিতে অবশ্য সংবাদমাধ্যমে নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি অনীশের মা। এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, 'যেদিন ও গ্র্যান্ডমাস্টার হবে, সেদিন আমাদের নাম জানাতে খুশি হব।'
গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু জানালেন, আসন্ন টাটা স্টিল কলকাতা চেজে অনীশকে পাঠানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।