রিমুভ এটিকে (Remove ATK) আন্দোলন নিয়ে উত্তাল মোহনবাগান ক্লাব (Mohun Bagan Club)। একে ওপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু করে দিলেন সবুজ-মেরুনের প্রাক্তন-বর্তমান কর্তারা। গতকাল রিমুভ এটিকে আন্দোলন পৌঁছে গিয়েছিল ক্লাব সচিব দেবাশিস দত্তের বাড়ি অবধি। সে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দুই পক্ষই। তাদের মতে এভাবে বিক্ষোভ দেখান উচিত হয়নি সমর্থকদের। তবে এটিকে রাখা না রাখা নিয়ে মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসে গেল। শুধু তাই নয়, একে অপরের ঘাড়ে দোষও চাপালেন প্রাক্তন ও বর্তমান সচিব।
গতকালকের প্রতিবাদ ঘিরে সোমবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে মোহনবাগান ক্লাব। সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের লেখা সেই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, 'ক্লাবের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন কিছু সমর্থক। মার্জারের সময়, দেবাশিস দত্ত সচিব ছিলেন না। তাই তাঁর এক্ষেত্রে বলার জায়গা ছিল না। আগের কার্যকরী কমিটি এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।''
আরও পড়ুন: সুনীলদের ম্যাচে রেফারিং বিতর্ক, বঞ্চিত হল নর্থইস্ট? VIDEO
পাল্টা দিয়েছেন প্রাক্তন সচিব সৃঞ্জয় বসুও। তিনি পাল্টা প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, '' ক্লাবের প্রেস রিলিজে সম্পূর্ন ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। মার্জারের সময় ক্লাবের কার্যকরী কমিটিতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগ সদস্য এবারও কমিটিতে আছেন। ফলে অনেকেই জানেন, আসল সত্যটা। ক্লাবের কার্যকরী কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে আমাকে আর দেবাশিস দত্তকে দায়িত্ব দিয়েছিল, পুরো ইস্যুটা নিয়ে এটিকের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য । ফলে সেই আলোচনায় সমান দায়িত্ব দেবাশিস দত্তরও ছিল। তাছাড়া চুক্তিপত্রে ফুটবল টিমের তৎকালীন কোম্পানি (মোহনবাগান ফুটবল ক্লাব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড)-এর তরফে আমি এবং দেবাশিস দত্ত দু জনেই সই করেছিলাম “ডিরেক্টর” হিসেবে। ফলে চুক্তিপত্রে সময় কে সচিব আর কে অর্থ সচিব সেটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। ফলে ক্লাবের তরফে একটা ভুল তথ্য দিয়ে সবাইকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।''
আরও পড়ুন: মোহনবাগান সচিবের বাড়ির সামনে মেরিনার্সদের বিক্ষোভ, কী দাবি সমর্থকদের?
এটিকে নাম তোলার ব্যাপারে দেবাশিস দত্ত ও সৃঞ্জয় বসু একসঙ্গেই সঞ্জীব গোয়েঙ্কাদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন বলে দাবি মোহনবাগানের প্রাক্তন সচিবের। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি লেখেন, ''ক্লাব বোধহয় প্রেস রিলিজ দেওয়ার আগে তথ্যগত ব্যাপারে আরও একটু সতর্ক হতে পারত। আমি পদত্যাগ করার আগে, আমি ও দেবাশিস দত্ত একসঙ্গেই ইনভেস্টর কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম, নাম পরিবর্তনের বিষয়ে।''
এনিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ক্লাবের সহ সভাপতি কুণাল ঘোষও। প্রথম থেকেই সমর্থকদের দাবি মেনে এটিকে নাম সরানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন কুণাল। তিনিও দেবাশিস দত্তদের পাশে থাকলেন না। বিবৃতি দিয়ে কুণাল জানিয়েছেন, ''১০ অক্টোবর প্রচারিত মোহনবাগান ক্লাবের বিবৃতির বয়ানের সঙ্গে অনেকাংশেই একমত নই। এ বিষয়ে এক্সিকিউটিভ কমিটিতে কোনো আলোচনা হয়নি। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা ও পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে। ক্লাবের সদস্য, সমর্থকদের আবেগকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া তখনও প্রয়োজন ছিল, এখনও প্রয়োজন।''
অর্থাৎ সব মিলিয়ে রিমুভ এটিকে আন্দোলন নিয়ে জোর বিতর্ক মোহনবাগান ক্লাবে। একে অপরের দিকে আঙুল তুলছেন কর্তা, প্রাক্তন কর্তারা। তবুও সমাধান এখনও অধরা। এর মধ্যেই মরশুমের প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠে হারতে হল এটিকে মোহনবাগানকে। চেন্নাইয়েন এফসি-র বিরুদ্ধে ২-১ গোলে হারল তারা। মাঠেও দেখা গেল না দর্শকদের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলের সিজন টিকিট যেখানে শেষ সেখানে সবুজ-মেরুন নিয়ে একেবারেই উৎসাহ নেই মেরিনার্সদের।