প্রয়াত সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্ত। সিঙ্গুরে তাপসী মালিককে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেই সময় তিনি ছিলেন সিঙ্গুরে সিপিএম জোনাল কমিটির সম্পাদক। বৃহস্পতিবার সকালে সিঙ্গুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের অপূর্বপুরে নিজের বাড়িতে মারা যান এই প্রবীণ নেতা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটার কারখানা নিয়ে তৈরি হয়েছিল টালামাটাল পরিস্থিতি। সেই সময় অনিচ্ছুক জমিদাতারা আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। অভিযোগ, অনিচ্ছুকদের শাসানি দিতেন তৎকালীন সিপিএম নেতারা। ২০০৬ সালেই সিঙ্গুরের বেরাবেরি মৌজায় উদ্ধার হয়েছিল তাপসী অর্ধদগ্ধ দেহ। সেই সময় তাপসী মালিককে খুন ও ধর্ষণ মামলায় সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্তের বিরুদ্ধে আঙুল উঠেছিল। সুহৃদ দাবি করেছিলেন, তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। বিরোধীদের লাগাতার চাপের মুখে সিবিআই তদন্তের অনুমোদন দেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রায় আড়াই মাস সিবিআই হেফাজতে ছিলেন সুহৃদ। তাঁকে লাই ডিটেক্টরের সামনেও বসানো হয়েছিল। গ্রেফতার হয়েছিলেন আর এক সিপিএম কর্মী দেবু মালিকও।
সুহৃদ দত্ত জামিনে মুক্তি পান। গত কয়েক বছর ধরেই তিনি পায়ের সমস্যায় অসুস্থ। তাঁর অভিযোগ, লাই ডিটেক্টরের সামনে বসানোর সময়ে পায়ে হাতে রাসায়নিক লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অনুমতিও নেওয়া হয়নি। পায়ে ঘা হয়ে যায়। সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবব্রত ঘোষ সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, রাজ্যে শিল্প চেয়েছিলেন সুহৃদ দত্ত। তাঁকে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছিল। দলীয় মর্যাদা মেনেই তাঁর শেষকৃত্য করা হবে। তিনি ছিলেন অকৃতদার ও দলের হোলটাইমার।
ঘটনার পর এখনও সুবিচার পাননি তাপসী মালিকের বাবা। সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্তের মৃত্যুর খবর শুনে তাঁর আক্ষেপ, তদন্ত শেষ হল না। তার আগেই মারা গেল মূল অভিযুক্ত।