দেশজুড়ে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও এখন করোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণে দোসর হাসপাতালে অক্সিজেন আর বেডের আকাল!
অক্সিজেনের আকালে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশের রাজধানী শহর দিল্লিতে। ফলে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা আর তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অক্সিজেনের কালোবাজারি! সঙ্কটজনক করোনা রোগীর প্রাণ বাঁচাতে পারে অক্সিজেন, সেই অক্সিজেনেরই দাম এখন আকাশ ছোঁয়া!
বাংলাতেও ক্রমশ বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদা। বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যাও। ভবিষ্যতে আরও ভয়বহ হতে চলেছে করোনা পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অক্সিজেন উৎপাদনে স্বনির্ভর হতে রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেনের প্ল্যান্ট তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্যের ৪৯টি সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি সমস্ত জেলা, মহকুমা ও স্টেট জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেনের প্ল্যান্ট তৈরির জন্য জায়গা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে।
শুধু সরকারি হাসপাতালেই নয়, রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও তাদের সাধ্য মতো লিকুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন ট্যাঙ্ক এবং জেনারেটর বসাতে বলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। ভবিষ্যতে রোগীর চাপ বাড়লেও অক্সিজেনের জোগানে যাতে কোনও রকম ঘাটতি না হয়, তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, হাসপাতালে অক্সিজেনের প্ল্যান্ট তৈরির জন্য প্রতিটি স্টেট জেনারেল স্তরের হাসপাতালকে অন্তত ১৫২ বর্গমিটার জায়গা রাখতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল কলেজে অক্সিজেনের প্ল্যান্ট বসছে।
জানা গিয়েছে, ৫ হাজার লিটারের একটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসবে মেডিক্যাল কলেজে। সূত্রের খবর, এই প্ল্যান্ট থেকেই পাইপ লাইনের মাধ্যমে হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে রোগীদের কাছে অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে।
সূত্রের খবর, বর্তমানে সসরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে রাজ্যে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ টন অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে। রাজ্যের দৈনন্দিন অক্সিজেনের উৎপাদন ও জোগানের পরিমাণ প্রায় ৪৭০ টন। তাই অক্সিজেনের জোগানের ঘাটতি নিয়ে এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই।
এখনও পর্যন্ত বাংলায় অক্সিজেনের উৎপাদন ও জোগানের পরিমাণ যথেষ্ট হলেও ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে ভবিষ্যতের জন্য রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালেই অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।