গত ৫ মে থেকে পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৬ মে থেকে রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন জারি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বিধিনিষেধের মেয়াদ আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে সারাদিনে হাতে-গোনা কয়েকটা ট্রেন চলছে রেলকর্মীদের জন্য।
এই স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রেল কর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে যে কোনও সাধারণ যাত্রীদের ওঠার অনুমতি দিতে নারাজ রেল কর্তৃপক্ষ। আপাতত শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মী, ব্যাঙ্ককর্মীদেরই স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতি মিলেছে।
রাজ্যে বিগত কয়েকদিনে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী। এই পরিস্থিতিতে কি রাজ্যজুড়ে জারি হওয়া বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হবে? এ প্রশ্নের উত্তরই এখন জানতে চাইছেন বাংলার মানুষ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে কবে থেকে লোকাল ট্রেন চালু হতে পারে, তার ইঙ্গিত দিলেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান সুনীত শর্মা।
বুধবার রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান সুনীত শর্মা জানান, ভোট মিটে যাওয়ার পর থেকেই রাজ্য লোকাল ট্রেন বন্ধ করতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল। রেল তা মেনেও নিয়েছে। বর্তমানে রেল ফের পরিষেবা চালু করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। রাজ্য সরকার যে দিন বলবে, সে দিন থেকেই পরিষেবা শুরু করা যাবে।
অর্থাৎ, সুকৌশলে লোকাল চালু করার বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দিকেই ঠেলে দিল রেলমন্ত্রক। তবে ট্রেন পরিষেবা চালু হলেও তা সম্পূর্ণ করোনা বিধি মেনেই চালানো হবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে রেল বোর্ড।
রাজ্যে লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়ার পর থেকেই সড়ক পথে শাক-সবজি, আনাজপাতি ও অন্যান্য পন্যের পরিবহণ ব্যায় বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। আকাশছোঁয়া ডিজেলের দামের প্রভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বর্ধিত পরিবহণ ব্যায় স্থানীয় বাজারেও প্রভাব ফেলছে।
বুধবার রেল বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশজুড়ে প্রতিদিন গড়ে ৮০৯টি স্পেশাল যাত্রীবাহী মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন চলছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ২৬টি স্পেশাল ট্রেন চালাচ্ছে রেল। তাই রাজ্য সরকার চাইলে বাংলায় ফের পরিষেবা চালু করার ইঙ্গিত দিয়েছে রেল বোর্ড।
আকাশছোঁয়া ডিজেলের দামের প্রভাবে পরিবহণ ব্যায় বেড়ে গিয়ে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার এখন ঊর্ধ্বমুখী। বাড়ন্ত বাজার দরে এখন ব্যাগ ভরাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্তকে। এই পরিস্থিতিতে লোকাল ট্রেন চালু হলে ফের বাজার দর কমতে পারে বলে আশা আম জনতার।