সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী জয়া আহসানের কয়েকটি ছবি সম্প্রতি ঝড় তুলেছে। জয়া নিজের ফেসবুকে পেজে পোস্ট করেছেন, জমিয়ে পান্তা ইলিশ খাওয়ার ছবি। পয়লা বৈশাখের আগেই এক থাল পান্তা নিয়ে কবজি ডুবিয়ে ইলিশ খাচ্ছেন জয়া। নিজের এই বিশেষ পেটপুজোর ছবি-ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে জোর চর্চায় দুই বাংলার প্রিয় অভিনেত্রী জয়া। প্রসঙ্গত বাঙালির কাছে বর্ষা মানেই ইলিশ মাছ। এ সময়ে বাঙালিদের ঘরে ঘরে চলে ইলিশ পার্বণ। ভাপা, পাতুরি, কালো জিরে দিয়ে পাতলা ঝোল— পাত জুড়ে থাকে ইলিশের নানা পদ। বাঙালির মন আনচান করে ওঠে ইলিশ দেখলে। জয়া আহসানের ইলিশ খাওয়া দেখে তাই অনেকেরই জিভে জল আসছে। তবে তাদের জন্য রয়েছে সুখবরও, চৈত্র মাসেও বাজারে দেখা মিলছে ইলিশের।
গড়িয়াহাট, মানিকতলা, যদুবাবুর বাজার, লেক মার্কেট সহ কলকাতা শহরের বিখ্যাত সব মাছের বাজারেই চৈত্র মাসেও দেখা মিলছে ইলিশের। এগুলি প্রকৃতপক্ষে চালানের মজুদ ইলিশ। স্বাদ মোটেই পদ্মার ইলিশের মতো নয়। তবে ইলিশ তো বটেই। একটু বড় মাছ বাজারে ৪০০-৫০০ গ্রামের এই ইলিশের দেখা মিলছে। দাম রয়েছে ১০০০ টাকার কাছাকাছি। তবে কলকাতার বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশের জোগান পেতে জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।
গঙ্গা নদীর ওপর ফরাক্কা বাঁধ তৈরির পর থেকেই ধীরে ধীরে এপাড় বাংলার মানুষের থালা থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে গিয়েছিল ইলিশ মাছ। বড় ইলিশ আর এখন গঙ্গায় পাওয়াই যায় না তেমন ভাবে । তাছাড়া বড় ইলিশ পেলেও তার দাম থাকে অধিকাংশের সাধ্যের বাইরে। এই যুগের ইলিশপ্রেমীদের সবচেয়ে বড় দুঃখ, এক-দেড় কেজির ইলিশ পাওয়া এখন বেশ বিরল ব্যাপার। সাধারণ, ৮০০-৯০০ গ্রামের ইলিশেরই আকাশছোঁয়া দাম। ছোট ইলিশে সেই আসল স্বাদটা যেন ঠিক পাওয়া যায় না। এদিকে বাংলাদেশের রাজবাড়ি জেলার অন্তর্গত গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীর দুইটি ইলিশ মাছ ১৭ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সম্প্রতি। শনিবার সকালে দৌলতদিয়া বাস টার্মিনাল সংলগ্ন আড়তে চার কেজি ওজনের মাছ দুটি নিলামে বিক্রি হয়। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া এলাকায় জেলেদের জালে ইলিশ মাছ দু'টি ধরা পড়ে। শনিবার সকালে মাছ দুইটি স্থানীয় আড়তে তোলা হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী নিলামে অংশগ্রহণ করেন। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের এক মৎস্য ব্যবসায়ী চার হাজার টাকা কেজি দরে মাছ দু'টি ক্রয় করেন।
কেন এখন তেমন বড় ইলিশ পাওয়া যায় না?
এক সময়ে দেড়-দুই কেজির ইলিশ মাছ কোনও ব্যাপারই ছিল না। কিন্তু অতিরিক্ত মাছ ধরার ফলে বড় মাছের সংখ্যা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। ছোট অবস্থাতেই ধরে নেওয়া হচ্ছে ইলিশ মাছ। ডিম-সহ মাছও অনেক বেশি পরিমাণে ধরা হয়। আর সেই কারণে বড় ইলিশের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ যদিও এই বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন। নির্দিষ্ট সময়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেই দেশে। ফলে মাছের প্রজনন, বেড়ে ওঠার চক্রে বাধা পড়ার ঘটনা হ্রাস পেয়েছে। আর সেই কারণে মাছ বড় হতে পারছে। সময়ের সঙ্গে পদ্মায় বড় ইলিশের সংখ্যা বাড়ছে।