এপ্রিলে খুচরো বাজারে মুদ্রাস্ফীতির হার কিছুটা কমলেও খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফলে খাদ্য সামগ্রীর জন্য বেশি ব্যয় করতে বাধ্য হয় জনগণ। যা রান্নাঘরের বাজেটের ওপর প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু খাদ্যদ্রব্যের এই মুদ্রাস্ফীতি আগামী কয়েক মাস সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে ডালের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে বিশাল ব্যবধান থাকায় আগামী ৫ মাস ডালের দাম কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। উচ্চ চাহিদা এবং কম জোগানের প্রভাবে দাম বাড়ছে।
নতুন ফসল না আসা পর্যন্ত দাম কমবে না
নতুন ফসল বাজারে না আসা পর্যন্ত দেশে ডালের দাম কমার আশা করা যাচ্ছে না। অক্টোবরে বাজারে নতুন ডালের সরবরাহ আসবে। এর পরই মুদ্রাস্ফীতি থেকে মুক্তি মিলবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বর্তমানে চাহিদা বেশি ও জোগান কম থাকায় ডালের দাম বাড়ছে। ডালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে না থাকায় খুচরো মুদ্রাস্ফীতি যতটা কম হওয়া উচিত ছিল ততটা কম হচ্ছে না। এই কারণে, আরবিআই-এর এখনও রেপো রেটের মতো মূল ঋণের হার কমানোর সুযোগ নেই, যে কারণে হোম লোন সহ সমস্ত ধরনের ঋণের সুদের হার কমানোর শর্ত তৈরি করা হচ্ছে না।
দেশে ডাল উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেশি
ডালের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পর্যায়ে চেষ্টা চালালেও তা সফল হচ্ছে না। ভারত ডাল উৎপাদনকারী দেশ, কিন্তু এখানে তাদের ব্যবহার উৎপাদনের চেয়ে অনেক বেশি। এই পরিস্থিতিতে ডালের চাহিদা মেটাতে ভারতকে আমদানির আশ্রয় নিতে হচ্ছে। ২০২২-২৩-এ দেশে ডালের আনুমানিক উত্পাদন ছিল ২৬.০৫ মিলিয়ন টন, যেখানে চাহিদা অনুমান করা হয়েছিল ২৮ মিলিয়ন টন।
অড়হর, ছোলা, কলাইয়ের দাম সবচেয়ে বেশি
বর্তমানে বাজারে অড়হর, ছোলা ও কলাই ডালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এপ্রিলে ডালের গড় মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ১৬.৮ শতাংশ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩১.৪ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে অড়হর ডালে। একইভাবে, ছোলার ডালে ১৪.৬ শতাংশ এবং কলাই ডালে ১৪.৩ শতাংশ হারে দাম বাড়ছে। ডালের অবদান প্রায় ৬ শতাংশ। এ কারণে মুদ্রাস্ফীতি মার্চে ৮.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে এপ্রিলে ৮.৭ শতাংশ হয়েছে। পরিসংখ্যান মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এক বছরে ডালের মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। ডালের মুদ্রাস্ফীতির হার ২০২৩ সালের এপ্রিলে ৫.৩ শতাংশ ছিল, যা ২০২৪ সালের এপ্রিলে ১৬.৮ শতাংশে বেড়েছে।