মহুয়া ফুল থেকে তৈরি পানীয় জায়গা করে নিয়েছে স্কচ, রামের পাশে। বিক্রি হচ্ছে পাঁচতারা হোটেলেও। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান মহুয়াকে ‘হেরিটেজ লিকার’-এর তকমা দেওয়ার পর থেকেই তা জায়গা করে নিয়েছে ধনীদের অন্দরমহলেও।
মহুয়ায় অ্যালকোহলের মাত্রাও ভিন্ন। তাই চোলাইয়ের পরিবর্তে কম দামি মহুলেই বাজি রাখছে আবগারি দফতর। আর কিছু হোক বা না হোক, শরীরটা তো বাঁচুক। সঙ্গে সাশ্রয়ও। সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে মদ বিক্রির উপরে জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। বিরোধী থেকে বিদ্বজ্জনেরা এর প্রতিবাদ করলেও সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকান নতুন করে খোলার সংখ্যা কমেনি। এ বার জন সাধারণকে আরও সস্তার ‘নেশা’র সামগ্রী পৌঁছে দিতে সেই সব দোকানেই বিক্রি শুরু হয়েছে ‘মহুল’।
মহুয়া দিয়ে মদ তৈরি হলে তা বেআইনি হিসাবে ধরা হবে না। মধ্য প্রদেশের নতুন আবগারি আইনে ব্যাপারটাকে স্বীকৃতি দিয়ে দেওয়াই হয়েছে। এর ফলে মধ্য প্রদেশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ মহুয়া থেকে পানীয় তৈরির আইনি ছাড়ও পাবেন। এমনকী আদিবাসীরা এই পানীয় সরাসরি বিক্রিও করতে পারবেন। ভোপালের বিহালাতে তো সরকারি অনুদানে মহুয়ার লিকার তৈরির ফ্যাক্টরিও খুলেছে। আদিবাসীদের অনেকেরই কর্মসংস্থান হয়েছে সেখানে।
একটি ব্র্যান্ডের অধীনে ১৮০ মিলিলিটার ও ৭৫০ মিলিলিটারের মদের বোতল বিক্রি হচ্ছে। মহুয়া ওয়াইনের দামও কম রাখা হয়েছে। এই মহুয়া ওয়াইনের ১৮০ মিলিলিটারের বোতলের দাম ২০০ টাকা এবং ৭৫০ মিলিলিটারের বোতলের দাম রাখা হয়েছে ৮০০ টাকা। দিন্ডোরি এবং আলিরাজপুরের দুটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে এই ঐতিহ্যবাহী মদ তৈরিতে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। আলিরাজপুরের উৎপাদকরা 'মন্ড' নামটি দিয়েছে।
এই মহুয়ার মৌতাত কিন্তু শুধু দেশে নয় বিদেশেও ছড়িয়েছে। ফরাসি পানশালাগুলিতে বেশ ভালরকম জনপ্রিয় দেশি মহুয়া। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলি ও লাগোয়া ঝাড়খণ্ড ও বিহার-ছত্তীসগঢ়ের বেশ কিছু অংশে মহুয়া গাছের ফুল থেকে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় মহুয়া।
তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মহুয়া খেলে মাথাব্যথার পাশাপাশি, দ্রুত লিভারের সমস্যা দেখা যাবে। একটানা পাঁচ বছর এই বস্তুটি পান করলে লিভার সিরোসিস রোগ হবে। রক্তে কোলেস্টেরেলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় হার্ট অ্যাটাকেরও সম্ভাবনা বাড়বে। কিডনিও নষ্ট হবে।