Vegetable Price Hike: প্রশাসনের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে সোমবার থেকে রাজ্য জুড়ে ব্যবসা বনধের ডাক দিলেন আলু ব্যবসায়ীরা। পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য কমিটি ও পশ্চিমবঙ্গ হিমঘর অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২২ জুলাই সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আলু ব্যবসার কর্ম বিরতি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি বিদ্যুৎ প্রতিহার ও সম্পাদক অরবিন্দ ঘোষ। তাঁরা একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, শনিবার রাত থেকে কোনও আলু হিমঘর থেকে বের করা হবে না। যদি কোনও আলু ইতিমধ্যেই হিমঘর থেকে বেরিয়ে থাকে, অথচ লোড করা হয়নি তা রবিবারের মধ্যে লোড করে বেরিয়ে যেতে হবে। সোমবার থেকে কোন লোড করাও যাবে না।
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য উপদেষ্টা বিভাস দে জানান, তাঁদের আলুবোঝাই গাড়ি অন্য রাজ্যে যেতে দিচ্ছে না প্রশাসন। রাজ্যের বিভিন্ন সীমানায় আটকে রয়েছে গাড়ি। অথচ সরকারিভাবে কেউ দায় স্বীকার করছেন না। এর প্রতিবাদে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ২২ জুলাই থেকে এই আলু ধর্মঘট ডাকা হচ্ছে।
এর ফলে আবার আলুর দাম নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনিতেই অন্যান্য সবজির দাম বেড়ে গিয়েছে এক লাফে অনেকটাই। এমনকী রাজ্য় সরকার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনকে টাস্ক ফোর্স নামিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও দাম খুব একটা নামেনি। আলু ব্যবসায়ী সমিতির এই সিদ্ধান্তের জেরে ফের বাজারে আলুর জোগানে ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য জুড়ে ফের আলুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি খোলা বাজারে আলু, পেঁয়াজ-সহ সব্জির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেন তিনি। সেই নির্দেশের পরই বাজারে বাজারে ঘুরে সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে কৃষি বিপণন দফতর, টাস্ক ফোর্স ও এনফোর্সমেন্ট বিভাগ। আলুর দাম কমানোর জন্যও নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। তার জেরেই কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির তরফে দাবি করা হয়েছে আলু সরবরাহের জন্য ভিন্রাজ্যের ব্যবসায়ীদের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে এ রাজ্য়ের ব্যবসায়ীদের। সেই বকেয়া আদায়ের একমাত্র রাস্তা এ রাজ্য থেকে আলু সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা। কিন্তু সম্প্রতি কোনও রকম আগাম নির্দেশিকা ছাড়াই পড়শি রাজ্যগুলিতে আলু রফতানি আটকে দিচ্ছে পুলিশ। এই অবস্থায় বকেয়া টাকা আদায় নিয়ে যেমন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তেমনই রাজ্যে মজুত আলু শেষ করা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। স্বাভাবিক ভাবে এই অবস্থায় আমরা বিপাকে পড়েই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে সোমবার থেকে উত্তরবঙ্গেও একই সঙ্গে ব্যবসা বনধের ডাক দিলেন আলু ব্যবসায়ীরা। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির তরফে প্রদীপ সাহা জানান, ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে অযথাই হয়রানি করা হচ্ছে। আলু যে ভিনরাজ্যে পাঠানো যাবে না তার কোনও লিখিত অর্ডার প্রশাসন দেখাতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের বনধ ছাড়া উপায় নেই। সোমবার থেকে কৃষকদের কাছে আলু কিনবেন না তাঁরা বলে জানিয়েছেন।