পোশাকে কোরানের লাইন প্রিন্ট করা। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল লাহোরের জনতা। রীতিমতো ঘিরে ধরে মহিলাকে 'শিক্ষা' দিতে এগিয়ে এল অনেকে। পোশাক খুলে ফেলার নিদানও দেওয়া হল। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের সৌজন্যে বরাত জোরে বাঁচলেন ওই মহিলা। সঙ্গে এটাও জানালেন, 'কোরান নয়, আরবিতে কিছু সাধারণ শব্দ লেখা ছিল জামাতে।'
ঘটনার বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে এক পুলিশকর্মীকে ওই মহিলা জানান, তিনি এবং তাঁর স্বামী লাহোরে শপিংয়ে বেরিয়েছিলেন। সেই সময়েই হঠাৎ তাঁকে এভাবে ভিড়ে ঘিরে ধরে। দাবি করা হয়, এই পোশাক এখনই খুলে ফেলতে হবে মহিলাকে।
ভিড় থেকে বাঁচকে কোনওমতে একটি রেস্তোরাঁয় আশ্রয় নেন মহিলা ও তাঁর স্বামী। এদিকে রেস্তোরাঁর বাইরে ক্রমেই ভিড় বাড়তে থাকে। ওই মহিলাকে বাইরে বেরিয়ে আসতে বলা হয়।
সৌভাগ্যবশত, তখনই বিষয়টি এক পুলিশ আধিকারিকের নজরে আসে। তিনি সেখানে আরও পুলিশকর্মীদের নিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। ক্রুদ্ধ জনতাকেও সামলানোর চেষ্টা করেন। এক মহিলা ASP খবর পেয়ে সেখানে আসেন। তিনি উত্তেজিত জনতাকে সামলান। এরপর মহিলাকে বোরখা-হিজাব পরিয়ে কোনওমতে বের করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান।
অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন যে, কোরানের আয়াত লেখা পোশাক পরলে, কোনও মহিলাকে এভাবে রাস্তার মাঝে পোশাক খুলে ফেলতে বলাটা মোটেই সমীচিন নয়। এর পাশাপাশি অনেকে একথাও বলেন যে, জামাতে কোনও অংশেই কোরানের কোনও উল্লেখ বা আয়াত ছিল না। বরং এটি সম্পূর্ণ আরবি ভাষায় কিছু সাধারণ শব্দ লেখা। এর সঙ্গে কোরানের কোনও সম্পর্কই নেই।
'ØÙÄÙˆØé মানে সুন্দর, এমনই আরও কিছু অতি সাধারণ আরবি শব্দ লেখা ছিল জামাতে,' লিখেছেন এক এক্স ব্যবহারকারী।
অনেকেই এই পোশাকের প্রস্তুতকারী সংস্থার ইনস্টাগ্রাম পেজ খুঁজে বের করেছেন। 'শালিক_রিয়াদ' ইনস্টাগ্রাম পেজে পোস্ট করা সেই পোশাকের বিজ্ঞাপনের ক্যাপশনে লেখা, 'রমজান ২০২২ কালেকশন এসে গিয়েছে।'
মহিলাকে হেফাজতে নেওয়ার পরে, তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, কারও ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানার তাঁর কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। এক মুসলিম ধর্মগুরুও সেই সময়ে তাঁর সামনে উপস্থিত ছিলেন।