বাংলা ও সিকিমের মধ্যে গাড়ি চলাচল সংক্রান্ত জটিলতা কেটে গেল নয়া মউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায়। শিলিগুড়িতে এই মউ চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে কিছুদিন আগে। যার ফলে উত্তরের পর্যটনের মানচিত্রে নতুন মাত্রা যোগ হল।
এতে বাড়তি সুবিধে পাবেন পর্যটকেরা। এখন থেকে বাংলার যে কোনও গাড়ি পর্যটকদের নিয়ে সরাসরি সিকিমের যে কোনও পর্যটনকেন্দ্রে পৌঁছতে পারবে।
তেমনই সিকিমের নম্বর প্লেটের গাড়িও বাংলার যে কোনও ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশনে পৌঁছতে পারবে। তবে স্থানীয় সাইট সিনের জন্য পর্যটকদের স্থানীয় গাড়ি নিতে হবে।
শুধুমাত্রা স্থানীয় সাইট সিন এর ক্ষেত্রে দুরাজ্য়ের পর্যটকদেরই স্থানীয় গাড়ি ভাড়া নিতে হবে। অর্থাৎ কলকাতা থেকে নিজের গাড়ি নিয়ে সরাসরি চলে যান গুরুডোংমার। এবার সেখান থেকে ঘুরতে হলে আপনাকে স্থানীয় গাড়ি নিতে হবে।
শুধু তাই নয়। দুই রাজ্যের মধ্যে সরকারি বাসের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি বেসরকারি পর্যটক বোঝাই গাড়ির সংখ্যাও কয়েকগুণ বাড়ছে। এর ফলে দুই রাজ্যের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে কয়েকগুণ। দুই রাজ্যের মধ্যে গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রেও কোনও অতিরিক্ত করের বোঝা আর বইতে হবে না।
তবে নাথুলা, সহ আন্তর্জাতিক সীমানা লাগোয়া ও অন্য কয়েকটি হাই অ্যালার্ট নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা সিকিমের স্পটগুলো এই চুক্তির বাইরে থাকছে। সেটির তালিকা দেওয়া থাকবে। টুর বুকিংয়ের সময় আপনি জানতে পেরে যাবেন কোথায় কোথায় যাওয়া যাবে।
বাংলার পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘এই চুক্তিতে পর্যটনে আরও জোয়ার আসবে।’ অন্যদিকে, সিকিমের পরিবহণ মন্ত্রী সনজিত খারেল বলেন, ‘আজ দুই রাজ্যের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। এই চুক্তি দুই রাজ্যের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।’
দুই রাজ্যের গাড়ি চলাচল নিয়ে বরাবর একটা সমস্যা ছিল। সিকিমে পশ্চিমবঙ্গের গাড়ি শুধুমাত্র গ্যাংটকের স্ট্যান্ড পর্যন্ত যেতে দিত। সেখান থেকে নেমে নতুন করে গাড়ি ভাড়া করতে হতো। ফলে বাগডোগরা বা এনজেপিতে পর্যটকদের নেমে এক গাড়িতে সমস্ত গন্তব্যে যাওয়া যেত না।
তাই অনেকে হয় গ্যাংটক কিংবা সিকিমের প্রথম জনপদ রংপোতে গিয়ে গাড়ি বদলাতেন। তাতে বাড়তি খরচ গুণতে হতো অকারণে। নতুন এই চুক্তির ফলে জটিলতা, খরচ ও হয়রানি কমবে।
পাশাপাশি এদিন বিভিন্ন রুটে গাড়ির সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। শিলিগুড়ি-গ্যাংটক রুটে আগে সরকারি বাস ছিল ২৫টা তা বাড়িয়ে ৩০টি করা হল। আবার গ্যাংটক থেকে শিলিগুড়ি ৪৫টি বাস চলত তা বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়েছে।
এছাড়া শিলিগুড়ি-নামচি রুটে আগে ৩টে বাস ছিল, তা বাড়িয়ে ৪টে করা হল। আবার গ্যাংটক থেকেও ৩টে বাস ছিল, তা বাড়িয়ে ৫টা করা হল। এর বাইরে শিলিগুড়ি-নামচি একটি নতুন রুট চালু হল। ওই রুটে যথাক্রমে শিলিগুড়ি থেকে যাবে ২টো বাস ও নামচি থেকে আসবে ৩টে বাস।
দীর্ঘদিনের দাবি মেনে কোচবিহারের সিতাই থেকে গ্যাংটক পর্যন্ত সরাসরি বাস চালু হল। এই রুটে আমাদের রাজ্য চালাবে ২টো বাস ও সিকিম চালাবে ১টি বাস। এমনকী, ট্যাক্সির সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। আগে ছিল ২ হাজার ৫০০ এখন করা হল ৩ হাজার।