শুধুমাত্র গর্ভবতী মহিলা ও অসুস্থ মানুষই নয় এবার থেকে বক্সার দুর্গম পাহাড়ে পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা পাবেন পর্যটকরাও। গত বছর ডিসেম্বর মাসে বক্সার দুর্গম পাহাড়ে প্রথম পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করেন আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন। ওজনে ভারী সেই পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা নিয়ে বিপাকে পড়েন পালকি বাহকরা। সেই থেকে পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
যদিও আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নতুন আটটি অত্যাধুনিক এবং আগের তুলনায় হালকা পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হতে যাচ্ছে বক্সা পাহাড়ে। আগামী একমাসের মধ্যেই বক্সার আটটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকার গ্রামে পৌঁছে যাবে অত্যাধুনিক এই পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা।
এবার থেকে এই পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা শুধুমাত্র পাহাড়ের কোলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ১৩ টি গ্রামের মানুষদের জন্যই শুধুনয় এই পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হবে বক্সা পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্যও। পর্যটকদের জন্য এই পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হলে বক্সা পাহাড়ের পর্যটনে এক বিপ্লব আসবে বলে মনে করছেন উত্তরবঙ্গের পর্যটন কারবারি মহল।
বক্সার পাহাড়ের কোলে রয়েছে চুনাভাটি, আদমা,লেপচাখা,লাল বাংলো, তাসিগাঁও, সদর বাজার, বক্সা ফোর্ট, ওসলুম সহ মোট ১৩ টি পাহাড়ি জনপদ।সমস্ত গ্রাম মিলিয়ে প্রায় ৫০০০ মানুষের বসবাস বক্সা পাহাড়ের কোলে। এই গ্রাম গুলোতে মূলত ডুকপা ও লেপচা জনজাতি বসবাস করে থাকেন।এছাড়াও এই গ্রাম গুলোতে রয়েছে লেপালি, আদিবাসী সমাজের মানুষের বসবাস।
বক্সার কোলে গড়ে ওঠা এই গ্রাম গুলোতে কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই। স্বাভাবিক ভাবেই এই গ্রামের মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা থেকে সম্পূর্ণ ব্রাত্য।গর্ভবতী মহিলা হোক কিংবা সাপে কাটা রোগী অথবা বৃদ্ধ কোন অসুস্থ মানুষ তাদের চিকিৎসার জন্য নির্ভর করতে হয় ৫০ কিলোমিটার দূরে আলিপুরদুয়ারে।
দুর্গম এই পাহাড়ের মানুষ গুলোকে বাঁশের মাচায় চাপিয়ে সান্তলাবাড়ি পর্যন্ত নিয়ে এসে সেখান থেকে ভাড়ার গাড়িতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হয় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। পাহাড় থেকে নামিয়ে আনার সময় অন্রক ক্ষেত্রেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তো গর্ভবতী মহিলা ও অন্য অসুস্থ পাহাড়ের মানুষ। যদিও পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হলে সেই মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমবে বলে অনুমান করছেন খোদ পাহাড়ের মানুষ।
সদর বাজারের বাসিন্দা ইন্দ্র বাহাদুর থাপা বলেন এই পালকি আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হলে আমাদের পাহাড়ের মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমে যাবে। তবে নতুন পালকি আ্যম্বুলেন্স গুলো আগের থেকে হালকা হলে ভালো হয়। আলিপুরদুয়ার জেলা শাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা জানিয়েছেন নতুন পালকি আ্যম্বুলেন্স গুলো আগের থেকে হালকা এবং মজবুত হবে।চারজন পালকি বাহকই অনায়াসে রোগীদের গন্তব্য স্থানে পৌঁছে দিতে পারবে।