এ বিশ্বে কত কিছুই আবিষ্কৃত হয়েছে। আবার অনেক কিছুই অনাবিষ্কৃত থেকে গিয়েছে। এমনই এক নবীন আবিষ্কার কাঞ্চনজঙ্ঘার বুকে নতুন উদ্দীপনা যোগাচ্ছে। আর এই আবিষ্কার বাঙালির কাছে নতুন উন্মাদনা নিয়ে এসেছে। কারণ এ আবিষ্কার বাঙালির আত্মার আত্মীয় রবি ঠাকুরের সঙ্গে জড়িত।
যার নাম টেগর রক (Tagore Rock)। প্রকৃতির অদ্ভুত উপহার ! কাঞ্চনজঙ্ঘাকে সান্দকফু অঞ্চল থেকে যে রকম শায়িত বুদ্ধের মতো লাগে, এও তেমন। ঠিক যেন রবীন্দ্রনাথের মুখ। রবীন্দ্রনাথ শুয়ে থাকলে তাঁর মুখাবয়ব যেমন লাগবে, অবিকল তাই।
কার্শিয়াংয়ের সিটংয়ের কাছে অহলদাড়ায়। দার্জিলিং থেকে ৪৫ কিমি দূরে। পাথরের এই বিচিত্র গঠনে তৈরি হয়েছে কবিগুরুর শায়িত আদল।
এখানকার হোম-স্টেগুলিতে বা আশপাশে ঘুরতে এলে এটিকে টুরিস্ট স্পট হিসেবে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন টুর গাইডরা।অহলদাঁড়ার ওই অঞ্চলকে ‘রবীন্দ্র পিক’ বলে পর্যটকদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। কেউ আবার বলেন টেগর রক।
ওই অঞ্চলের বাসিন্দা ও পর্যটন গাইডরা জানিয়েছেন কিছু দিন আগে কলকাতার এক পর্যটক ওই বিচিত্র গঠনের পাথরের ছবি তুলে প্রথম তাঁদের দেখান।
ওই পাথর দেখে মনে হয়, ঠিক যেন বৃদ্ধ বয়সের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মুখ। বিশ্বকবি নিজে কাঞ্চনজঙ্ঘা ভালবাসতেন এবং অনেকবার এসেছেন। তাই যেন তাঁকে প্রকৃতি উৎসর্গ করেছে এই রক।
এই ‘আবিষ্কার’কে এলাকার অর্থনৈতিক দিক থেকে কাজে লাগাতে চাইছে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-ও। টুরিস্ট স্পটগুলির মধ্যে এটিকে শামিল করা হয়েছে।
জিটিএর ট্যুরিজমের তরফে জানানো হয়েছে, পাথরের এই বিচিত্র গঠন আচমকা এলাকা সম্পর্কে মানুষকে আগ্রহী করে তুলেছে। যারা সিটং আসছেন, তাঁরা ওই পাথর দেখতে যাচ্ছেন। শিলিগুড়ি থেকে খুব সহজেই যাওয়া যায়। কার্শিয়াং, দার্জিলিং, মংপু, কালিম্পং সব জায়গা থেকেই এক কথায় গাড়ি পৌঁছে দেবে আপনাকে।
জানা গিয়েছে, যে জায়গা থেকে পাথরের ওই বিচিত্র গঠনকে রবীন্দ্রনাথের মুখ বলে মনে হয় সেখানে একটি সেলফি জোন তৈরি করা যায় কি না সে ব্যাপারে জিটিএ একটি রিপোর্ট তৈরি করছে।
জায়গাটা ‘ডায়রেক্টোরেট অব সিনকোনা অ্যান্ড আদার মেডিসিনাল প্লান্টস’-এর আওতায়। তাদের সঙ্গে কথা বলে পার্ক তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ এমন একটা আবিষ্কার, যা স্থানীয় অঞ্চলের অর্থনীতি পালটে দিতে পারে।
মজার বিষয় হল, দার্জিলিং পাহাড়ের যে জায়গায় বিশ্বকবি নিয়মিত যেতেন, সেই মংপু থেকে অহলদাঁড়ার এই ভিউ পয়েন্ট খুব কাছেই। মাত্র আধ ঘণ্টার পথ। কী বলবেন একে? কাকতালীয় নাকি প্রকৃতির বিস্ময়।