এক করোনা, তার উপর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে রক্ষে নেই। এবার দোসর আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু।
করোনার সাথেই এবার আলিপুরদুয়ার জেলায় ভারত-ভুটান সীমান্তে আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লুর ভাইরাস ধরা পড়লো।
ভারত এবং ভুটান দুই দেশেই এই সোয়াইন ফ্লুর ভাইরাস ধরা পরায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে দুই দেশের প্রশাসনিক কর্তারা।
প্রতিবেশী দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার শুয়োরের খামার থেকেই এই ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে বিবৃতি জারি করেছে রয়্যাল গভর্নমেন্ট অফ ভুটান।
দুই দেশের উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকরা দুই দেশের সীমান্তবর্তী দুই শহর ভুটানের ফুন্টশোলিং এবং ভারতের জয়গাঁ শহরে শুয়োরের প্রতিপালন এবং মাংস কেনাবেচার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালেই রয়্যাল গভর্মেন্টের তরফে ফুন্টশোলিং এর জেলা শাসক দাশো দোরজি আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনকে ই-মেল মারফৎ একটি চিঠি পাঠিয়েছে। সেই চিঠিতেই বলা হয়েছে যে ভুটান স্বাস্থ্য দপ্তর পরিক্ষায় দেখা গেছে ভারত-ভুটান সীমান্তের দুই শহরে আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে।
এই বিষয়কে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই দেশের সীমান্ত শহর পরিদর্শন করেন দুই দেশের প্রশাসনিক আধিকারিক মহল।
এই দলে ছিলেন জয়গাঁ ডেভেলপমেন্ট অথরিটির আধিকারিক ভূষন শেরপা, জয়গাঁ দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পুরব লামা, পশু চিকিৎসক ডি,দাস, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৫৩ নম্বর ব্যাটেলিয়ন এর কমাডান্ট মুকেশ কুমার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
জেডিএ আধিকারিক ভুষন শেরপা বলেন ভুটান থেকে চিঠি মারফৎ এই বিষয়টি জানানো হয়েছে।ভারত-ভুটান সীমান্তের দুই দেশের দুই শহরে আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লুর ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে।
বর্তমানে করোনা সংক্রমণের জেরে দুই দেশে লকডাউন লাগু আছে। তার মধ্যে নতুন করে অন্য একটি ভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি চিন্তার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
পশু চিকিৎসক ডি,দাস বলেন সোয়াইন ফ্লু শুয়োর থেকেই ছড়ায়। আমাদের প্রাথমিক অনুমান ভারত-ভুটান সীমান্তবর্তী ফুন্টসোলিং-জয়গাঁর শুয়োরের খামার থেকেই এই ভাইরাস ছড়িয়েছে।
ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফ থেকে জয়গাঁ এলাকায় শুয়োরের পালন ও মাংস বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ভূষণ শেরপা জানান সরকার পরবর্তী নির্দেশিকা না দেওয়া পর্যন্ত কেউ শূয়রের মাংস কেনা, বেচা করতে পারবে না।
এদিন ভুটানের ফুন্টশোলিং শহরের আশেপাশের ভুটিয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের একই নির্দেশ দিয়েছে ভুটানের প্রশাসন।
একে করোনা, ব্ল্য়াক ফাঙ্গাস নিয়ে জর্জরিত গোটা দেশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গও। তারপরও আবার নতুন করে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে চিন্তিত এলাকাবাসী।
এখনও পর্যন্ত মানুষের দেহে সংক্রমণের খবর মেলেনি। তবে ভুটানে শুয়োরের দেহে মিলেছে মারণ ভাইরাস।
যেহেতু সোয়াইন ফ্লু মানুষের দেহে সংক্রমিত হলে মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী হতে পারে, তাই সতর্কতা জারি করা জরুরি ছিল।
জয়গাঁর বিভিন্ন এলাকায় শুয়োরের ফার্ম রয়েছে। যেখানে শুয়োর প্রতিপালন করা হয়। কয়েকশো শুয়োর প্রতিদিন এলাকায় কেনাবেচা হয়। ভুটানের ফুন্টশোলিং বর্ডারে সুয়ারেজ প্লান্ট পয়েন্টের কাছে শূয়র পালন হয়। ওখান কার শূয়রে সোয়াইন ফ্লু পাওয়া গেছে। তার ১০০ মিটারের মধ্যে ভারতের সুভাষপল্লি এবং তলাবস্তিতে শুয়োর পালন হয়। সে সব এলাকায় পালন নিষেধ।
জয়গাঁর তলাবস্তি, গুয়াবাড়ি, সুভাষপল্লি এলাকায় শুয়োর কেটে মাংস বিক্রির একটা বড় বাজার রয়েছে। সেগুলি আপাতত লকডাউনের নির্ধারিত সময়েও খোলা যাবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে কয়েক বছর আগে এলাকায় ফ্লুর দাপট দেখা দিয়েছিল। যাতে বেশ কয়েক জনের মৃত্যুর খবরও মিলেছিল। তবে তা সোয়াইন ফ্লু ছিল না। ফলে এবার আগাম সতর্ক প্রশাসন।
স্বাস্থ্য দপ্তর বলছে যেখানে সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়ে তার এক কিলোমিটার এলাকায় সমস্ত শুয়োরকে মেরে ফেলতে হয়।এবং শুয়োর পালন বন্ধ করা হয়।ভুটানে শুয়োর মেরে কবর দেওয়া হচ্ছে।