খেলতে গিয়ে মুখে দিয়ে ফেলেছিল পেরেক। বিরল অস্ত্রোপচার করে ৩ বছরের শিশুর গলা থেকে পেরেক বের করে প্রাণে বাঁচিয়ে দিলেন চিকিৎসকরা। নজির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের। মাত্র কয়েক ঘন্টায় মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে এই বিরল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের এই ভূমিকায় আপ্লুত জানিয়েছে দুঃস্থ পরিবার।
সরকারি হাসপাতালে বড় সাফল্য
সরকারি হাসপাতাল কিংবা মেডিক্যালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েই মাঝেমধ্যেই বিস্তর অভিযোগ তোলেন রোগীর পরিবার। তবে এরই মাঝে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বিরল অস্ত্রোপচার করে শিশুর প্রাণ বাঁচিয়ে নজির স্থাপন করল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
কীভাবে আটকেছিল পেরেকটি
বুধবার শিলিগুড়ির ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ আরিস নামে বছর তিনেকের এক শিশু খেলতে খেলতে গিলে একটি পেরেক। যা তার গলায় আটকে যায়। এরপর তার প্রবল কাশি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। রাতেই শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। বাবা মহম্মদ আনিসুর পেশায় শ্রমিক। ফলে বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করানোর সামর্থও তাদের ছিল না। গোটা বিষয়টি জানা মাত্র, শিশুটির এক্স-রে করে পেরেকটির অবস্থান দেখে নেন চিকিৎসকরা। দেখা যায় গলার অনেকটা নীচে পেরেকটি বাইরের দিকে আটকে রয়েছে। অস্ত্রোপচারের জন্য তড়িঘড়ি সাতজনের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে করা হয় অস্ত্রোপচার।
সাতজনের মেডিক্যাল বোর্ড অস্ত্রোপচার করে
এই মেডিক্যাল বোর্ডে সাত সদস্যের চিকিৎসক দল প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে অস্ত্রোপচার করেন । জানা গিয়েছে ওই মেডিকেল বোর্ডে ছিলেন, সার্জেন শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বেই ওই অস্ত্রোপচার করা হয়। এ ছাড়া অন্য চিকিৎসকদের মধ্যে ছিলেন মণিদীপা সরকার, সৌমেন্দু দাস, অ্যানাসথেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক তারাপদ দাস, সুব্রত মন্ডল ও চিকিৎসক কুনাল।
আপাতত বিপন্মুক্ত রয়েছে শিশুটি
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক শেখর বন্দোপাধ্যায় বলেন, "শিশুটির বয়স খুবই কম। জটিল অস্ত্রপচার ছিল। তবে আমরা পিছপা হইনি। ওই পেরেকটি বার করা গিয়েছে। চিকিৎসায় আপাতত বিপদমুক্ত শিশুটি। তাকে অবজারভেশনে পিকুতে রাখা হয়েছে।"
প্রসঙ্গত কিছুদিন আগে পথ দুর্ঘটনায় এক মহিলার বুক ফুঁড়ে গিয়েছিল বাঁশ। গুরুতর জখম ওই মহিলার বিরল অস্ত্রোপচার করে প্রাণ বাঁচিয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে এটি বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল, কারণ এটি একটি শিশু। তবে শেষমেষ বাচ্চাটিকে সফলভাবে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।