"যতদিন রাজনীতিতে থাকব, দিদির সঙ্গেই থাকব।" বৃহস্পতিবার কলকাতার ধর্মতলায় ২১ জুলাই এর সভামঞ্চ থেকে দাবি করলেন বিজিপিএম সভাপতি তথা জিটিএ চিফ এক্সিকিউটিভ অনীত থাপা। মঙ্গলবারই পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। তিনি যাওয়ার পথে জানিয়ে গিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
বুধবারই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জিটিএ নিয়ে রিভিউ মিটিং করেন অনিত থাপা। বুধবার কলকাতায় তিনি পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাতে পাহাড়ের জল প্রকল্প নিয়েও আলোচনা করেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জিটিএ আইন অনুসারে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর হস্তান্তর বিভাগ হিসাবে রয়েছে। রাজ্য সরকারের হাত থেকে দফতরটি জিটিএতে হস্তান্তর হলেও কয়েক বছর কাজকর্ম রাজ্যের দফতর দেখছিল। বুধবারের বৈঠকের পর পাহাড়ের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জিটিএ-র অধীনে যাচ্ছে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অনিত থাপা আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি রাজ্য সরকারের সঙ্গে থেকে রাজ্যের সহযোগিতায় পাহাড়ের উন্নয়ন করবেন। তার প্রমাণ ২০১৬ থেকেই তারা দিয়ে আসছেন। পাহাড়ে বিমল গুরুংদের ধারাবাহিক অশান্তি ছড়ানোর সময় দল ছেড়ে বিনয় তামাংকে সঙ্গে নিয়ে তিনি শান্তি ও উন্নয়নের পথে ছিলেন। রাজ্যের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেখান থেকেই শুরু করেছেন ২০২২ এ জিটিএ ভোটে জেতার পর থেকে।
অনিত বুধবার বৈঠকের পর জানিয়েছেন, ‘‘পাহাড়বাসীর সমস্যার মধ্যে পানীয় জল অন্যতম। ভোটের ইস্যুতেও ছিল পানীয় জলের সমস্য়ার সমাধান। কলকাতায় বৈঠক থেকে পানীয় জল, গ্রাম উন্নয়ন দিয়ে তা শুরু হল বলে তিনি জানান।
সম্প্রতি দার্জিলিং সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জিটিএ সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০২৪-এর মধ্যে পাহাড়ে ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে। তারপরই সময় না নষ্ট করে তা নিয়ে কাজ শুরু করে দিলেন অনিত।
দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ও মিরিককে ঘিরেই পাহাড়ের পানীয় জল প্রকল্পের প্রস্তাব রয়েছে। দার্জিলিং শহরে জলের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। তাই সেখান থেকেই শুরু হবে। বাকি জায়গাগুলিতেও দ্রুত তা করা হবে।
জিটিএ নির্বাচনে জয়ের পর রাজ্য সরকারের সঙ্গে অনিত থাপার সখ্যতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে । তবে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় সরাসরি অনিত থাপার উপস্থিতি অন্য চোখে দেখছে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিকদলগুলি।বিরোধীদের অভিযোগ, অনিত থাপা আগে থেকেই রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে অলিখিত জোট করে চলছিল । আর এদিনের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে এবার তা আরও প্রকাশ্যে এল।
অন্যদিকে, বুধবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে একটি গান উৎসর্গ করেন অনিত থাপা। অনিত জানান, "মুখ্যমন্ত্রীকে কার্শিয়াংয়ে স্বাগত জানানোর সময় কিছু নির্বাচনী নেপালি গান চলছিল । সেটা মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দ হওয়ায় তিনি অনিতকে অনুরোধ করেন যাতে এমনই গান যদি তৈরি করা যায় বাংলায়। সেই মতো বাংলায় অনুবাদ করে কার্শিয়াংয়ে রেকর্ডিং করা হয়েছে।