দলের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে বিজেপি ছাড়লেন রায়গঞ্জের বিধায়ক ৩২ বছরের দলের কর্মী কৃষ্ণ কল্যাণী। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানালেন, দেবশ্রী চৌধুরীর সঙ্গে একই দল করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। এভাবে কারও নাম করে দল ছাড়ার ঘোষণা নজিরবিহীন। ফলে অস্বস্তিতে দল এবং গোটা রাজ্যের নজর এখন তাঁর দিকে।
তৃণমূলে যোগ দেবেন ?
তাঁর দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করার পরই তাঁর তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই বেসুরো ছিলেন রায়গঞ্জের বিধায়ক। ঘুরিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন দিলীপ ঘোষ, দেবশ্রী চৌধুরীদের কাজকর্মের বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই তাঁর দিকে নজর ছিল দলের। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করা হচ্ছিল দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কমিটির তরফে। তবে বরফ যে গলেনি, তা এদিন জলের মতো পরিষ্কার করে দিলেন তিনি নিজেই।
দলকে কোনও রকম ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে দলত্যাগ
তারপরই বৃহস্পতিবার কৃষ্ণ কল্যাণীকে শোকজ করেছিল রাজ্য কমিটি। উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি বাসুদেব সরকার জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই নোটিশ পাঠানো হয়েছিল বিধায়ককে। যদিও কৃষ্ণ কল্যাণীর দাবি, তিনি কোনও নোটিশ পাননি। তবে শোকজের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতেই রায়গঞ্জে গিয়ে সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপরই তাঁর বিরুদ্ধে দলকে কোনও রকম সুযোগ না দিয়ে দল ছাড়লেন তিনি। তারপর থেকেই তিনি রাজনীতির মহেন্দ্র সিং ধোনি হবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা উসকে দিচ্ছে।
দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে মূল ক্ষোভ
দেবশ্রীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতেই কৃষ্ণ কল্যাণীকে দলে ফিরতে আহ্বান জানিয়েছিল তৃণমূল। রায়গঞ্জ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অরিন্দম সরকার তাঁকে তৃণমূলে ফিরতে বলেন। তবে এদিন বিজেপি ছাড়ার কথা বললেও তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে কোনও রা কাড়েননি।
বিধায়কের সম্মান নেই যেখানে
কয়েকদিন আগে বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে জানিয়েছিলেন, এখানকার সাংসদ কখন আসেন, কখন যান বিজেপি কর্মীরা কিছুই জানেন না। এলাকার মানুষ প্রয়োজনে তাঁর দেখা পান না। এমনকী তাঁকে ভোটে হারাতে দেবশ্রী ষড়যন্ত্র করেছেন বলেও অভিযোগ করেন। এমনকী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব হারিয়ে এখন মানসিক অবসাদে ভুগছেন রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী বলেও প্রকাশ্যে মন্তব্য় করেন তিনি। এদিন বলেন, দেবশ্রীর সঙ্গে একসঙ্গে সংগঠন করা সম্ভব নয়। এরপর দলের হয়ে কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছিলেন না। এদিন বলেন, যেখানে বিধায়কের সম্মান নেই, সেখান থেকে সরে যাওয়াই ভাল।” এবার তিনি কতদিন একা থাকেন, কবে কোনও দলে যোগ দেন সেদিকে নজর সকলের।