চাকরির টোপ দিয়ে এলাকার বাইরে নিয়ে চাকরির জন্য দেওয়া টাকা হজম করে নেওয়ার পাশাপাশি দম্পতিকে খুন করার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারে। যদিও পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করায় উত্তেজনা কিছুটা প্রশমন হয়েছে।
গ্রেফতার কৃষ্ণগোপাল পুরনো পাপী
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ধৃতের নাম কৃষ্ণগোপাল অধিকারী ওরফে গোঁসাই। বাড়ি ইটাহারেই বলে জানা গিয়েছে। তার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক ব্য়ক্তির কাছ থেকে টাকা নয় ছয়, চাকরির টোপ দিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ ছিল। তবে খুনের অভিযোগ এই প্রথম বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনাটি কখন প্রকাশ্যে আসে
শুক্রবার সকালে মালদহ থেকে দম্পতির দেহ উদ্ধারের খবর প্রকাশ্যে আসতেই ইটাহারে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। তদন্তে নেমেই পুলিশ সূত্র ধরে কৃষ্ণগোপাল অধিকারীকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার নেপথ্যে ঘটনা
ইটাহারের বাঙ্গার এলাকার বাসিন্দা গৌতম সরকারের স্ত্রী সবিতা সরকারের জন্য চাকরি খুঁজছিলেন তাঁরা। তাঁদের ইচ্ছের খবর জেনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ায় কৃষ্ণ। নার্সের চাকরি পাওয়ার জন্য ধৃত কৃষ্ণগোপাল অধিকারীর উপর ভরসা করে শিলিগুড়িতে রওনা হন। তাঁদের বলা হয় শিলিগুড়িতে চাকরি হবে। এই ঘটনা গত ৪ মের। এরপর থেকে তাঁদের আর খোঁজ ছিল না।
পুলিশে অভিযোগ দায়ের নিখোঁজের বাবার
চার পাঁচদিন খোঁজাখুঁজির পর কোনও হদিশ না মেলায় ৯ মে ইটাহার থানায় পুত্র ও পুত্রবধূর নিখোঁজের কথা অভিযোগ জানিয়ে ডায়রি করেন গৌতমবাবুর বাবা রামরঞ্জন সরকার। এর আগে বাড়িতে কৃষ্ণগোপালের কথা জানা থাকায় কৃষ্ণগোপালের নাম ডায়রিতে দেন তাঁরা। ঘটনার পর থেকে কৃষ্ণগোপালেরও খোঁজ মিলছিল না।
গাজল থেকে দুজনের দেহ উদ্ধার
এরপর শুক্রবার সকালে মালদহের গাজলে, কৃষ্ণগোপালের ভাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় গৌতম এবং সবিতার ক্ষতবিক্ষত দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁদের দু জনকে দুই ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। দু’জনের শরীরেই আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাঁদের থেকে ৪ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে বলে খবর।
বাঙ্গারে উত্তেজনা ভাঙচুর, আগুন
বেলার দিকে ঘটনার খবর আসতেই ইটাহারের বাঙ্গার এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়। ধৃত কৃষ্ণগোপাল অধিকারীর বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় এলাকার বাসিন্দারা। এর আগেও তার বিরুদ্ধে এ ধরনের তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় এলাকায়। তবে এবার কী কারণে দম্পতিকে ভিন জেলায় নিয়ে গিয়ে একেবারে খুনের মতো ঘটনা ঘটাল, সে প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশি তদন্ত শুরু
বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে বিশদে কিছু বলতে নারাজ জেলা পুলিশ। রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।