রাজ্য রাজনীতির লড়াই থেকে অবসর ঘোষণা করলেন বামফ্রন্টের দীর্ঘদিনের কাণ্ডারি মিস্টার কুল অশোক ভট্টাচার্য।
আর ভোটে দাঁড়াবেন না তিনি
রাজনৈতিক সন্ন্যাস না নিলেও ভোট রাজনীতি থেকে অবসর ঘোষণা করলেন শিলিগুড়ির ;চাণক্য', অশোক ভট্টাচার্য। চারবারের মন্ত্রী, পাঁচ বারের বিধায়ক, একবার শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র এবং শিলিগুড়ি পুরসভা থেকে পুরনিগমে উত্তীর্ণ হওয়ার আগে চেয়ারম্যান। সেইসঙ্গে ২০১১ তে দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসানের পর রাজ্য রাজনীতিতে বামফ্রন্টের পতাকা উঁচুতে তুলে রাখার অন্যতম কারিগর তিনি। সেই সময় হারলেও ২০১৬ তে প্রবল পরাক্রমে মেগা তারকা বাইচুং ভুটিয়াকে পরাস্ত করে ফিরে এসেছিলেন বিধানসভায়। ২০২১ এ গোটা রাজ্যের বাম-কংগ্রেস আইএসএফ জোটের পতনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পতনও লেখা হয়ে যায়। সেই সঙ্গে রাজনীতির একটা যুগের পরিসমাপ্তি ঘটল।
দেওয়াল লিখন স্পষ্ট হয় গণনার দিনই
গণনার কয়েক রাউন্ড পর থেকেই ফলের পূর্বাভাস বুঝতে পেরে গণনা কেন্দ্রে ছেড়েছিলেন অশোকবাবু। তারপরই সিদ্ধান্ত নেন অনেক হয়েছে আর নয়। এবার অবশেষে নতুন প্রজন্মকে জায়গা করে দেওয়ার পালা।
তবে মেন্টর হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন
তবে প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেও দলীয় রাজনীতিতে তিনি অবশ্য থাকছেন। ভবিষ্যতের বাম নেতা কর্মীদের অভিভাবক হিসেবে তিনি মেন্টর এর কাজ করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।
অশোকবাবুর নিজের বক্তব্য
অশোক বাবু বলেন আর রাজনৈতিক লড়াইয়ে থাকছি না। তবে অভিভাবক হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিজের অভিজ্ঞতার কিছুটা অংশ যদি ফিরিয়ে দিয়ে যেতে পারি সেটুকুই হবে আমার দায়িত্ব। আজীবন বামপন্থী দল ছাড়া কিংবা অন্য কোন কিছু চিন্তা-ভাবনা করতে চাননি। আগে থেকেই ঠিক করেছিলেন এই বিধানসভাতে জয়ী হয়ে বিধায়ক হলে এটাই হবে তাঁর শেষ বিধায়ক পদ। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর তার প্রশাসনিক রাজনীতির জীবন ৫ বছর কমে গেল।
তাঁর পরামর্শ চান বিরোধী তৃণমূল নেতা
যদিও তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে শিলিগুড়ি পৌরসভায় অন্যান্য প্রশাসনিক কাজে সহায়তা চেয়েছেন বিদায়ী পর্যটন মন্ত্রী তথা শিলিগুড়ি পুরো নিগমের প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত গৌতম দেব। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে জনপ্রতিনিধির কাজ শুরু করেন। তা ছাড়া কুড়ি বছর রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন তিনি। ফলে তিনি যে সাহায্য করার জন্য যোগ্য লোক তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
দলের জন্য কাজ শুরু
অনিল বিশ্বাস ভবনে তিনি জানান, তিনি দলের নন প্লেইং ক্যাপ্টেন হিসেবেই কাজ করে যাবেন। আপাতত কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করা এবং তাদের মনোবল বাড়ানোই তাঁর কাজ। হারের কারণ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তিনি নিজেও বিভিন্ন বুথে যাচ্ছেন। পাশাপাশি জানান, এখন আর তিনি কোনও নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন না এবং পুরভোটে নতুন কোনও মুখ দেখা যাবে।