উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে শিলিগুড়িতে আন্দোলন থামার কোনও লক্ষণ নেই। এর আগে বাগডোগরা গোঁসাইপুর এর ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা পাস করতে না পেরে গালিগালাজ করেছেন স্বয়ং ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়কে। এবার সেই যে ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে সোমবারও দফায় দফায় বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা শিলিগুড়িতে বিক্ষোভ, অবরোধ জারি রেখেছে শহরজুড়ে। শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় তাদের অবরোধ তুলতে পুলিশকে গলদঘর্ম হতে হয়েছে। অবরোধে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছে।
পাশের দাবিতে রাস্তা অবরোধ
এদিন শিলিগুড়ি লাগোয়া ফুলবাড়ি মোড়ে ফুলবাড়ি হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা রাস্তা অবরোধ করে ধরনায় বসে। তাদের পাস করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি না দেওয়া পর্যন্ত তারা ধরনা থেকে উঠবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে অবশ্য পুলিশ তাদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিরস্ত করেছে। কিন্তু তারা তাদের দাবি থেকে একচুলও সরছে না বলে ঘোযণা করে দিয়েছে।
হাসমিচক স্তব্ধ
অন্যদিকে শিলিগুড়ির তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়-এর একদল ছাত্র গিয়ে অবরোধ করে বসে শহরের হিলকার্ট রোডের হাসমিচকে। তাদেরও একই দাবি পরীক্ষা যেমনই হোক তাদের করাতেই হবে। গত বছরও সবাইকে পাস করানো হয়েছিল। এ বছর কেন ফেল করানো হয়েছে প্রশ্ন তোলে তারা। তাদের অভিভাবকরাও তাদের সঙ্গে হাজির ছিলেন বিভিন্ন জায়গার বিক্ষোভে। এ বছরও সেভাবেই সবাইকে পাস করাতে হবে বলে দাবি তোলে তারা। এর পেছনে চক্রান্ত দেখতে পাচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা।
খারাপরা পাশ করেছে, ভালরা ফেল!
ফুলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের দাবি, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তারা সবাই প্রাক্টিক্যাল সাবমিট করেছে। হোম সেন্টার পরীক্ষা দিয়েছে। ভালো করে পরীক্ষা দেওয়ার পরেও তাদের ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে। অথচ যারা খারাপ পরীক্ষা দিয়েছে তারা পাশ করে গিয়েছে। এবার কারা খারাপ পরীক্ষা দিয়েছে, তারা কি করে জানলেন? উত্তর মেলেনি। তাদের দাবি, তারা খারাপ ছাত্রছাত্রী। তাই খারাপরা, ভালো পরীক্ষা দিতে পারেন না। রাজ্যের বহু বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীকে ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে। বোর্ডের ভুলের জন্যই এমন হয়েছে বলে অভিযোগ পড়ুুয়াদের।
আন্দোলনে যোগ শহরের একাধিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের
এদিকে ফুলবাড়ি মোড় অথবা হাসমিচকের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থানে বসায় বিপাকে পড়েছেন পুলিশও। একে ছাত্র-ছাত্রী। তাই আবার ১৮ পেরোয়নি অধিকাংশই। ফলে বল প্রয়োগ করতেও পারছিলেন না তারা। রীতিমতো গলদঘর্ম হয়ে হাত জড়ো করে তাদের কাছে অনুনয়-বিনয় করতে দেখা গিয়েছে পুলিশকর্মীদের। শেষমেষ অবশ্য নরমে-গরমে বুঝিয়ে তাদের সেখান থেকে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন বিক্ষোভে দফায় দফায় শামিল হয়েছে শহরের শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির, মার্গারেট স্কুলের একাংশ অকৃতকার্যরাও।