শিলিগুড়ি পুরনিগম এখন তৃণমূল কার্যালয়
''শিলিগুড়ি পুরনিগম এখন তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়।'' এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিদায়ী মেয়র তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। তার অভিযোগ, প্রশাসকমন্ডলীর সদস্য ছাড়াও তৃণমূলের বিভিন্ন নেতারা বিভিন্ন দপ্তরে বসে থাকেন। তাঁদের অঙ্গুলিহেলনেই এখন পুরনিগমের কাজ চলতে থাকে। বিশেষ করে যাঁরা বিভিন্ন দল থেকে তৃণমূল সম্প্রতি এসেছেন, তাদের নির্দেশেই কাজ চলছে বলে অভিযোগ অশোকবাবুর।
প্রাক্তন কাউন্সিলররাই পুরনিগম চালাচ্ছেন
এমনকী সরকারি আইন অমান্য করে কাজ করছেন তাঁরা বলে অভিযোগ করেন তিনি। অশোকবাবুর অভিযোগ, কেউ এখন জনপ্রতিনিধি নন। তাই প্রাক্তন কাউন্সিলরও এভাবে সাধারণ নেতা হিসেবে বসে থাকতে পারেন না।
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল
যদিও তাঁর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য রঞ্জন সরকার জানিয়েছেন, উনি হেরে গিয়েছেন। ওঁর চুপ করে থাকাই উচিত। এসব ওঁর মুখে এখন মানায় না।
রাজ্যের নির্দেশই মানছে না শিলিগুড়ি পুরবোর্ড
অশোকবাবুদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের নির্দেশ রয়েছে করোনা পরিস্থিতিতে কোনও দফতরের তরফে বিল্ডিং মেরামতির টাকা খরচ করা যাবে না। এখন করোনা মোকাবিলাই অগ্রাধিকার। কিন্তু শিলিগুড়িতে প্রশাসক বোর্ড নির্দেশ মানেনি। তারা কেউ নির্বাচিত নয়। জোর করে তাদের প্রশাসক পদে বসানো হয়েছে। তাদের উচিত এখন করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া। বিল্ডিং মেরামতি নয়। শিলিগুড়ি ছাড়া সব জায়গাতেই বিদায়ী মেয়র চেয়ারম্যানদের প্রশাসক করা হয়েছে। শুধু শিলিগুড়িতে তৃণমূল নেতাদের বসানো হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বলে তিনি দাবি করেছেন। যদি তৃণমূলের তরফে তার এই বক্তব্যের জবাব দিতে চাওয়া হয়নি।
প্রশাসক পদে তৃণমূলের নেতা ও ঘনিষ্ঠরাই
শিলিগুড়ি পুর নিগমের প্রশাসক পদে বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য কে সরিয়ে প্রশাসক করা হয়েছে হেরে যাওয়া বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবকে। তার সঙ্গে প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য করা হয়েছে বিভিন্ন তৃণমূল নেতা ও অনুগামীদের। রঞ্জন সরকার প্রাক্তন কাউন্সিলর হলেও বাকি দুজন কস্মিনকালেও কাউন্সিলর ছিলে না। অন্যতম সদস্য অলক চক্রবর্তী কয়েক দফা কংগ্রেস-তৃণমূল-কংগ্রেস-তৃণমূল করে আপাতত শাসকদলে রয়েছেন। তাঁকে সদস্য় করা হয়েছে। অন্য় সদস্য বিবেক বৈদ একজন ব্যবসায়ী।
বিদায়ী মেয়র পারিষদ-কাউন্সিলরদের অগ্রাহ্য
প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে বসেই প্রাক্তন ও বিদায়ী মেয়র পারিষদ-কাউন্সিলর-বরো চেয়ারম্যানদের সাহায্য নেবেন বলে জানিয়েছিলেন গৌতম দেব। যদিও কার্যক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে পর্যন্ত প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর ও মেয়র পারিষদ কমল আগরওয়াল, প্রাক্তন আরএসপি নেতা ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতোরা পুরনিগমে ঢোকার অনুমতি পাননি। তবে দল বদলাতেই উল্টো চিত্র। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।