কোচবিহারে সাগরদিঘি থেকে উদ্ধার হলো দিঘির জলে ফেলে রাখা প্যান্টে জড়ানো পবিত্র কচ্ছপ মোহন এর মৃতদেহ। পচা গলা অবস্থায় কচ্ছপটির দেহ ভাসতে দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। কীভাবে কচ্ছপটি মারা গেল তা জানা যাচ্ছে না। সম্ভবত প্যান্টে জড়িয়ে বের হতে না পেরেই কচ্ছপটির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। স্থানীয় মানুষের কাছে পবিত্র ও পূজ্য এই কচ্ছপের মৃত্যু ঘিরে অঘটনের আশঙ্কা দানা বাঁধছে শহরবাসীর মনে।
সাগরদিঘির জল থেকে উদ্ধার হয় পূর্ণ বয়স্ক ওই কচ্ছপের পচাগলা দেহ। এই নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ায় সাগরদিঘি চত্ত্বরে। স্পোর ও অনাসৃষ্টি নামে দুটি সংস্থা কচ্ছপটিকে দেবীবাড়ি ফরেস্ট অফিসের হাতে তুলে দেয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে এক ব্যাক্তি সাগরদিঘির কোর্টের সামনের ঘাটে কচ্ছপের দেহটি ভেসে থাকতে দেখেন। তিনিই প্রথম কোচবিহার অনাসৃষ্টির এক সদস্য সুমন্ত সাহাকে খবর দেন। সুমন্তবাবু কোচবিহারের একটি বন্যপ্রান উদ্ধারকারী সংস্থা স্পোরকে খবর দেন। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ওই দুই সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। কচ্ছপ্টিকে উদ্ধার করে দেবীবাড়ি ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসে জমা দেয়।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওই কচ্ছপটি হল শর্পসেল টার্টল প্রজাতির। এটি মোহন নামে পরিচিত। এই মোহনকে কোচবিহারবাসী দেবতা জ্ঞানে পুজা করে। মোহন কোচবিহারবাসীর ভাবাবেগের সাথে জড়িত। তাই এই মোহন মৃতুর ঘটনায় তাই কোচবিহারবাসী ব্যথিত।
ওই দুই সংস্থার তরফে এদিন অভিযোগ করা হয়, সাগরদিঘিতে জামা কাপর কাচা হয়। আবর্জনা ফেলার মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। তাতে দিঘির জল দূষিত হচ্ছে। এই মৃত কচ্ছপটিও সাগরদিঘিতে ফেলে দেওয়া একটি প্যান্টে আটকে ছিল। একটি দিঘির বাস্তুতন্ত্র তথা খাদ্য শৃঙ্খল রক্ষায় কচ্ছপের ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ন। আর এই শর্পসেল টার্টল প্রথম সারির সংরক্ষিত শ্রেণির। সরকারি কোনও রেকর্ড না থাকলেও কোচবিহারের ছোটবড় প্রায় সব দিঘিতেই কম বেশি মোহন আছে। এই দুঃখজনক ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তাঁরা।
এই ঘটনায় দেবীবাড়ি ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার আশ্বাস দিয়েছেন, কচ্ছপটির ময়না তদন্ত করা হবে। এবং তারপর কেন এভাবে পচে মরে গেল, তার কারণ জানা যাবে।