একটা আস্ত গাছকে 'শ্বাসরোধ করে খুন' করেছে আরেকটি গাছ। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এমনটাই ঘটেছে হাওড়ার শিবপুরের আচার্য্য জগদীশচন্দ্র বসু ভারতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে। সেখানে একটি বটগাছের গ্রাসে চলে গেছে গোটা একটি রুদ্রাক্ষ গাছ।
৫০ বছর আগে বসানো ওই রুদ্রাক্ষ গাছের অন্তর্ধান রহস্যের জাল ভেদ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীদের সামনে উঠে এসেছে এই তথ্য। এরপর উদ্যানের রেকর্ড ঘেঁটে জানা যায় উধাও মোট ১৭৪টি গাছ। মৃত্যুর মুখে আরও অনেক বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ।
মূলত বট ও অশ্বত্থ গাছই ওই গাছগুলিকে মেরে ফেলেছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু উদ্যানেই নয়, অন্য জায়গাতেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
বটানিক্যাল গার্ডেনের বিজ্ঞানী বসন্ত সিং জানাচ্ছেন, এর নেপথ্যে রয়েছে মোরাসি প্রজাতি কিছু গাছ, মুলত বট। পাখিরা এই গাছের ফল খায়, তারপর সেই ফল বা পাখির বিষ্ঠা পড়ে অন্য গাছের ওপর। সেখান থেকে ওই গাছগুলির ওপরে জন্মায় নতুন গাছ। নতুন গাছে ঝুরি ও শিকর অন্য গাছটিকে ধীরে ধীরে ঘিরে ফেলে। অবশেষে প্রচণ্ড চাপে এবং আলো বাতাস না পেয়ে মৃত্যু হয় ভিতরের গাছটির। এক্ষেত্রে শিবপুরের পৃথিবী বিখ্যাত গ্রেট ব্যনিয়ান ট্রি-ও এইভাবে একটি খেজুর গাছকে মেরে ফেলেছে বলে জানাচ্ছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে বটানিক্যাল গার্ডেনের যুগ্ম অধিকর্তা কনাদ দাস জানান, এটি উদ্যান, কোনও অরণ্য নয়। কোনও গাছ যত্রতত্র অরণ্যে জন্মাতে পারে, উদ্যানে নয়। বহু অবাঞ্ছিত গাছকে বড় হতে দেওয়ার জন্যই এই বিপত্তি ঘটছে। এবার থেকে যে সমস্ত গাছ বসানো হবে এবং সংরক্ষণ করা হবে সেগুলি ছাড়া আর কোনও গাছ উদ্যানে রাখা হবে না। এমনকি সংরক্ষিত গাছের ওপরেও গাছ জন্মালে তা সরিয়ে দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে উদ্যানের এক কর্মী জানান বহু বছর এখানে কাজ করছেন। প্রথমে বিষয়টি চোখে পড়েনি, পরে বিজ্ঞানীদের থেকে এই বিষয়টি জানতে পারেন তাঁরা।