জগদ্ধাত্রী(Jagadhatri Puja 2020) মানেই চন্দননগর (Chandannagar), আর চন্দননগর মানেই শোভযাত্রায় (Procession) চোখ ধাঁধানো আলেকসজ্জা। যা বছর বছর শুধু হুগলি জেলা নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা, ভিন রাজ্যে এমনকি বিদেশের মানুষকেও আকৃষ্ট করে এসেছে। চন্দননগরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরতে পরতে মিশে রয়েছে এই আলোকসজ্জার ঔজ্জ্বল্য। কিন্তু করোনা আবহে এবার সেই ঐতিহ্যের পরম্পরায় ছেদ। পুজো হলেও হচ্ছে না শোভাযাত্রা। আর যার ফলস্বরূপ শোভাযাত্রার আলোকসজ্জা উপভোগের আনন্দ এবারের মতো অধরাই থেকে যাবে মানুষের। শুধু তাই নয়, এর ফলে বিপুল ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে আলোকশিল্পীদেরও।
এপ্রসঙ্গে চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ সাউ জানাচ্ছেন,"চন্দননগরবাসী হিসেবে প্রত্যেকের মন খারাপ। রাস্তায় পুজোর ৪ দিন আলোকসজ্জা থাকবে। কিন্তু শোভাযাত্রার আলোজসজ্জা একেবারে নতুন। যে সমস্ত আলোকশিল্পীরা সেগুলি তৈরি করেন পুজোর পরে তাঁদের মধ্যে থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীকে বেছে নেওয়া হয়। যার ওপর ভিত্তি করে সারাবছরের জন্য সেই সমস্ত আলোক শিল্পীদের চাহিদা তৈরি হয়। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়া বা টেলিভিশনের পর্দায় আলোকসজ্জা দেখেও বুকিং করা হয় ওই শিল্পীদের। কিন্তু এবছর শোভাযাত্রা না হওয়ায় সেই সুযোগ পাচ্ছেন না শিল্পীরা।"
প্রায় একই কথা শোনা গেল আলোক শিল্পী বাবু পালের মুখ থেকেও। তিনি জানান,"একজন আলোকশিল্পী হিসেবে এই ঘটনা খুবই বেদনাদায়ক। শোভাযাত্রায় নতুন লাইট লাগান হয়। সেখান থেকে সারা ভারত ও বিদেশে কাজের খবর হয়। যেহেতু এবছর শোভাযাত্রা হচ্ছে না তাই এটা প্রায় ১ বছর পিছিয়ে যাওয়া। ব্যবসায় প্রভূত আর্থিক ক্ষতি।" এছাড়া কর্মী সংকটের দিকটিও তুলে ধরেন বাবু পাল। তিনি বলেন,"দীর্ঘ লকডাউনের ফলে আলোক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেক কর্মীই সবজি বিক্রি, ফল বিক্রি বা মাছ বিক্রির মতো অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। তাঁরা এখন আর আলোক শিল্পে ফিরতে চাইছেন না। ফলে এবছর পুজোর সময় কর্মী সঙ্কট দেখা দেয়।" আগামিদিনেও যদি এমনটা চলতে থাকে তাহলে জগৎবিখ্যাত চন্দননগরের আলোক শিল্প রীতিমতো সমস্যায় পড়বে বলেই মনে করেন তিনি। প্রসঙ্গত, এবছর চন্দননগরে ১৫টি কমিটিতে হবে ঘটপুজো এবং ১৫৬টি কমিটিতে হবে প্রতিমা পুজো।