পদ্ম পুরস্কারের (Padma awards 2021) তালিকা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন বেশ কয়েকজন বঙ্গ সন্তান। তাঁদেরই একজন পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) বাসিন্দা প্রবীণ শিক্ষক সুজিত চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য তাঁকে এই সম্মান প্রদান। খাতায় কলমে সুজিতবাবু অবসরপ্রাপ্ত। তবে পাঠদান থেমে থাকেনি। আর তাইতো বিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণের পরেও শিক্ষাদানের মধ্যে দিয়ে গড়ে তুলছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। বর্তমানে 'সদাই ফকিরের পাঠশালা'র মাষ্টারমশাই ৭৮ বছরের সুজিতবাবু। আর পাঠশালার গুরুদক্ষিণা কত জানেন? বছরে ২ টাকা। বর্তমানে পাঠশালায় ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩০০-রও বেশি। মূলত নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে ছেলেমেয়েরাই পড়তে আসে 'সদাই ফকিরের পাঠশালা'য়।
শুধু শিক্ষাদানই নয়, বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজেও একইভাবে এগিয়ে আসেন সুজিতবাবু। বিগত কয়েক বছর ধরে তাঁরই উদ্যোগে শুরু হয়েছে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা শিবির ও আক্রান্তদের সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা। প্রতিবছর সরস্বতী পুজোর পরে এই শিবিরের আয়োজন করা হয়। এখনও পর্যন্ত এলাকারই ৭ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন সুজিতবাবু। তুলে দিয়েছেন নিজের পেনশনের টাকা। পদ্ম পুরস্কারের তালিকায় সুজিতবাবুর নাম থাকায় খুশির হাওয়া তাঁর পরিবার সহ গোটা গ্রামে।
অন্যদিকে জামদানি শাড়িতে নিপুন শিল্পকর্মের জন্য পদ্ম পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় স্থান পেলেন নদিয়ার (Nadia) ফুলিয়ার চটকা তলার বাসিন্দা বীরেনকুমার বসাক। ফুলিয়ার তাঁত শিল্পকে বিশ্বের দরকারে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এই পুরস্কার। ১৫ বছর বয়সে তাঁত বোনার কাজ শুরু করেন তিনি। একটা সময় বাড়ি বাড়ি ফেরি করে বিক্রি করেছেন শাড়ি। দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে জামদানি নিয়ে কাজ করে চলেছেন। খাদি, মটকা, তসর, সিল্ক, মসলিন সহ বিভিন্ন কাপড়ে তাঁর তৈরি নকশা নজর কেড়েছে সকলের। আগামিদিনে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবর রহমানের মুখের আদলে নকশা কাটা শাড়ি বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। এর আগে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও এসেছে বীরেনবাবুর ঝুলিতে। নাম উঠেছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে। বীরেনবাবুর নয়া এই সম্মান প্রাপ্তির খবরে খুশি গোটা জেলা।