BJP MLA Writes To CM Mamata: শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকা জুড়ে বিঘার পর বিঘা সরকারি জমি দখল করছে জমি মাফিয়ারা (land Mafia)। তার বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে প্রয়োজনে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম(সিট) গঠন বা সিবিআই তদন্ত করা হোক। এমনই দাবি জানিয়ে এবং দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত সমস্ত দোষীদের বিরূদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Mamata Banerjee) চিঠি দিলেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন। বিশেষ করে এই সমস্ত জমি দখল ও দুর্নীতির পিছনে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের হাত রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। ইতিমধ্যেই তাঁর এলাকায় সরকারি জমি দখল করে তা বিক্রি করে দেওয়া এবং মানুষকে ভুল বুঝিয়ে পাট্টা তুলে দেওয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন আরেক বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ও। এদিকে জমি দখল ও বিক্রির অভিযোগ স্বীকার করলেও তা নিয়ে রাজ্য সরকার নজিরবিহীনভাবে উদ্যোগ নিচ্ছে বলে পাল্টা দাবি করেছেন তৃণমূলের শিলিগুড়ির মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত।
এদিন আনন্দময় বলেন, "শিলিগুড়ি মহকুমা এবং সংলগ্ন এলাকায় বিশেষ করে মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় জমি মাফিয়াদের দ্বারা জমি দখলের বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূল নেতা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, জমি মাফিয়ারা জমি অধিগ্রহণ, দখল এবং জমির রেকর্ডের নথি হেরফের এবং বিকৃত করে অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত। গোটা অঞ্চলে সরকারি জমি, বন বিভাগের জমি, স্কুলের জমি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জমি, সরকারি মাঠ, ব্যক্তিগত সম্পত্তিও ব্যাপক জবরদখল হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দখলদাররা অবৈধ নির্মাণ করেছে এবং যথাযথ অনুমোদন ছাড়াই জমি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে।"
এর পিছনে ভূমি সংস্কার দফতরের কর্মকর্তাদের একাংশ জড়িত রয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পুলিশও সহযোগিতা করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে সহজ সরল আদিবাসী ও রাজবংশী সম্প্রদায়ের দরিদ্র জনগণকে জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্রে সই করিয়ে প্রতারিত করা হয়েছে। এর বিরোধিতা করলে জমি মাফিয়ারা প্রায়ই ভয় দেখান।
পানিট্যাঙ্কিতে চা বাগানের জমিতে অবৈধ মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে। বালাসন, পঞ্চনই, মাঞ্জা সহ একাধিক নদীর তীরে স্থানীয় জমি মাফিয়াদের দ্বারা সরকারি জমিতে বড় বাণিজ্যিক ভবন, বিদ্যালয় ও আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তারা লক্ষ লক্ষ টাকায় সরকারি জমি অবৈধভাবে বিক্রি করছে। প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ এবং তৃণমূলের নেতারাও গুলমা রেলস্টেশনের পাশে সরকারি জমি, বনভূমি, চা বাগানের জমি এবং রেলের জমি দখল করে অনেক নতুন অবৈধ রিসর্ট তৈরি করেছেন। অভিযোগ, সরকার সামান্য কিছু ক্ষেত্রে লোক দেখানো তদন্ত করার চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ট নয়। এজন্য সিট গঠন বা সিবিআই তদন্তের মাধ্যমে সমস্ত দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি সমস্ত সরকারি জমি পুনরূদ্ধার করা ও সাধারণ প্রতারিত মানুষের প্রতি সুবিচার করার আবেদন করেছেন বিধায়ক।
কদিন আগেই চম্পাসারি লাগোয়া সাতমাজুয়াদীপ এলাকায় জমির পাট্টা দেওয়ার নাম করে কয়েকশো পরিবারের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা করে নিয়েছে স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল নেতা-নেত্রী বলে অভিযোগ তোলেন বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। তিনিও কড়া শাস্তি চেয়েছেন অভিযুক্তদের। যদিও তিনি মনে করেন, লোকদেখানো ধরপাকড়ে কাজ হবে না।
এদিকে তৃণমূলের শিলিগুড়ির মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত বলেন, "জমি দখলের কাজে সব দলের লোকজনই জড়িত রয়েছে। তাদের সকলের বিরুদ্ধে সমান মনোভাব নিয়ে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করছে। কাউকে ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক রং না দেখে নজিরবিহীন ব্যবস্থা নিচ্ছেন।"