সোমবার উত্তরবঙ্গের কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় প্রথম সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয়রাই। রেল যাত্রীদের উদ্ধার করে এগিয়ে আসেন তাঁরা। তাঁদের জন্যই উপহার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ সফরের মধ্যেই এই ঘোষণা করেন তিনি। ট্রেন দুর্ঘটনার পর প্রশাসনকে সাহায্যকারী স্থানীয়দের প্রশংসা করেন তিনি। আর সেই সাহায্যের পুরস্কার হিসেবে তাঁদের চাকরি দিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাহায্যকারীদের প্রশংসা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
দার্জিলিঙের রাঙাপানি এলাকায় সকাল পৌনে ন'টা নাগাদ রেল দুর্ঘটনা ঘটে। সেই সময় ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে। ভেজা বাতাসে যেন হাড়ে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছে। বিকট শব্দ পেয়েই লাইনের দিকে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। সামনের দিকের কামরা থেকে তখন অনেক যাত্রী নামতে শুরু করেছেন। কিন্তু পিছনের ৩টি বগির অবস্থা রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো। একটি বগির তো এমনই অবস্থা যে, মালগাড়ির ইঞ্জিনের উপর উঠে গিয়েছে। ২০-৩০ ফুট উঁচু থেকে ঝুলছে। কামরাগুলি প্রায় দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে।
সেই সময় প্রথম সাহায্যে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রাই। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ প্রশাসনকে দুর্ঘটনার খবর জানিয়ে নিজেরাই উদ্ধার কাজ শুরু করে দেন। একে একে যতজনকে পারেন বের করে আনতে শুরু করেন। উদ্ধারকারীদের টিম পৌঁছে গেলেও সরে আসেননি তাঁরা। বরং তাঁদের সঙ্গেই, তাঁদের নির্দেশ মেনে সাহায্য করতে থাকেন। তাঁদের সহযোগিতাতেই দ্রুত বহু আহত যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন উদ্ধারকারীরা।
প্রশাসনের আসার আগেই স্থানীয়রা নিজেরাই ৮ থেকে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনেন। কেউ কেউ আহতদের কাঁধে তুলে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। পরে অ্যাম্বুলেন্স আসার পর তাঁরা ২০ থেকে ৩০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেন। কেউ কেউ ট্রেনের বগি থেকে মৃতদেহও বের করে আনেন।
ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যকারী ব্যক্তিদের মধ্যে স্কুল ছাত্র, কৃষক এবং কয়েকজন শ্রমিকও রয়েছেন। ঈদের নামাজ আদায় করে ফিরছিলেন তাঁরা। উদ্ধারকাজের পাশাপাশি ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীদের জন্য জল ও বিস্কুটের ব্যবস্থাও করেন তাঁরা।
খবরটি হিন্দিতে পড়তে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।