বর্ষায় লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। এই অবস্থায় উত্তরবঙ্গে বন্যা হতে পারে। আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তিনি জানান, উত্তরবঙ্গে জায়গায় জায়গায় জল জমছে। এমনটা প্রতিবার হয়। কালিম্পঙে ধস নেমেছে। সিকিমও বিধ্বস্ত। মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, উত্তরবঙ্গে বন্যা হতে পারে। সেজন্য সতর্ক থাকার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি পর্যটকদের উদ্দেশেও বার্তা দিয়ে বলেন, 'বর্ষার সময় পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চার না করতে গেলেই ভালো। এমনিতেই ওই অংশে ধস নামে। তাই নিরাপদ থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে।'
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যে রিপোর্ট তিনি পেয়েছেন সেখান থেকে বুঝতে পেরেছেন, উত্তরবঙ্গে বন্যা হতে পারে। তিনি আরও জানান, উত্তরবঙ্গে ভূমিক্ষয়ের আশঙ্কা রয়েছে। প্রত্যেটি দফতরের আধিকারিকদের এই বিষয়ে নজর রাখতে হবে। প্রয়োজনে আধিকারিকদের যোগাযোগার নম্বর রাখতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সিকিমে কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে সেখানে সরু রাস্তা। কোনও কোনও জায়গায় ধসও নেমেছে। কেউ কেউ আটকে পড়েছে। সেই দিকগুলো খেয়াল রাখা দরকার প্রশাসনের। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কালিম্পংয়ে বর্ষায় ধস নামে। এটা প্রতিবারই হয়। উত্তরবঙ্গের একাধিক বিভাগ ও জেলা থেকে তথ্য পেয়েছি। তা থেকে পরিষ্কার যে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। সেচ দফতর প্রতিবার একটা রিপোর্ট দেয়। তাদের তরফে মনিটারিং সিস্টেম চালু করা হয়। এবারও তা করতে হবে। যাতে কেউ আটকে পড়লে তাদের উদ্ধার করা যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, মালদায় গঙ্গার ভাঙন চলছে। গত ১০ থেকে ১২ বছর ধরে এই ভাঙন চলছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার তা নিয়ে নজর দিচ্ছে না। এর ফলে রাজ্য সরকারকেই পুরোটাই নজর রাখতে হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, যখন তিনি সাংসদ ছিলেন তখন কেন্দ্রের সঙ্গে একটা চুক্তি হয়েছিল। সেই মোতাবেক গঙ্গা ভাঙনে কোনও বাড়ি তলিয়ে গেলে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। ভাঙন রোধে খননকার্য চালানো হবে। চুক্তিপত্রে এমন শর্তও ছিল। কিন্তু সেই চুক্তিমতো কোনও কাজই হয়নি।
তিস্তা নিযে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যে সাক্ষাৎ তারও সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, তাঁকে না জানিয়ে দুজনে আলাপচারিতা সেরেছেন। 'বলছে তিস্তার জল দেবে। জল রয়েছে যে দেবে? উত্তরবঙ্গে কেউ পানীয় দল পাবে না। সেদিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।'
এছাড়াও উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার বর্ষার ছবি তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। জানান, উত্তরবঙ্গে ধস নামলে সেনার খেয়াল রাখা দরকার। বর্ষাকালে জলপাইগুড়ি প্রতিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আত্রাই নদীতে বাঁধ দেওয়ার সময়ও জানানো হয়নি। জলসঙ্কট তৈরি হয়েছে।
কোচবিহারের মাথাভাঙাও বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত বলে দাবি করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। জানান, সেখানে সেচ দফতরের অনেক কাজ বাকি রয়েছে। সব বিভাগের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে কাজ করা দরকার।