Teesta Disaster: গত কয়েক বছরে দারুণ বিপর্যয়ের মুখে তিস্তা। একদিকে টানা বৃষ্টিতে নাব্যতা হারিয়ে উপচে পড়ছে, অন্য়দিকে ধসের কারণে তিস্তার পার ধসে যাচ্ছে। সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিতে সিকিম থেকে নেমে আসা তিস্তার জল যেভাবে পাহাড়ি এলাকায় ক্ষতি করছে তা সামাল দেওয়া অত্যন্ত কঠিন। তার উপর প্রচুর অর্থ ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সহ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগিতাও জরুরি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি জিটিএ-র আওতাভুক্ত হওয়ায় সেচ দফতরের তরফেও পদ্ধতিগত জটিলতা রয়েছে পদক্ষেপ করার। সেই সমস্যা মিটিয়ে বৃহত্তর জনস্বার্থে নাব্যতা ফেরানোর কোনও উপায় বের করা যায় কি না, তা নিয়ে সহযোগিতা চেয়ে জিটিএ রাজ্য সেচ দফতরে চিঠি পাঠিয়েছে।
সেচ দফতরের তরফে জিটিএ-র পাঠানো চিঠি নিয়ে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। দফতর কী সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে, তা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
চিঠিতে কী রয়েছে?
তিস্তার গভীরতা বাড়ানো এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেচ দফতরের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়ে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (GTA)। সিকিম থেকে তিস্তা এ রাজ্যে প্রবেশ করে জিটিএ-এলাকার মধ্যে দিয়েই। তারপর সমতলে নেমে আসে। কিন্তু বেশি বিপদ তৈরি হচ্ছে পাহাড়ি এলাকাতেই। ইতিমধ্যে সিকিমও তিস্তা নিয়ে কী করা যায় তা নিয়ে ঘনঘন বৈঠক শুরু করেছে। তিস্তা নিয়ে দুই রাজ্যেরই বড় ভূমিকা রয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রের তরফে কমন কোনও বন্দোবস্ত করলে সুবিধা হবে বলে মত সকলেরই। জিটিএ-র ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সেচ দফতর ইতিমধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করে কলকাতায় রিপোর্ট পাঠিয়েছে বলে খবর।
সমস্য়া কোথায়?
জিটিএতে সেচ দফতরের একটা অংশ হস্তান্তর করা হয়েছে। জিটিএ এলাকার সেচ সংক্রান্ত কাজ তারাই দেখে। জিটিএ-র নিজস্ব কিছু ইঞ্জিনিয়ার থাকলেও সেচ দফতরের অত্যাধুনিক পরিকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি। তিস্তার জলস্ফীতিতে ক্ষতি হয়েছে তিস্তা বাজার, সেলফিদারা, ২১ মাইল, পেশক হয়ে দার্জিলিংয়ের রাস্তা সহ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া জিটিএ এলাকায় পড়ে।
টানা ধস ও বন্যায় পাহাড়ের নুড়ি-পাথর তিস্তায় বয়ে এসে তিস্তার বুকে জমা হচ্ছে। একপাশে ঘন জঙ্গল থাকায় তিস্তা থেকে নুড়ি, বালি তুলে নদীর গভীরতা বাড়ানোর কাজটি খুব চ্যালেঞ্জিং বলে সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি। যদিও ভরা বর্ষাতে সে কাজও শুরু করা সম্ভব নয়। পাহাড়ের বৃষ্টির জল তিস্তা দিয়ে নিম্নমুখী। সঙ্গে আসা বালি, নুড়ি, বোল্ডারে ভরাট হচ্ছে নদী।
সেচ দপ্তরের রিভার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ ও দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা বর্ষার আগেই সেবকের সমতল থেকে মেখলিগঞ্জ অবধি তিস্তা অববাহিকায় সমীক্ষা করেন। তাতে তিস্তার বেশকিছু এলাকা থেকে বালি, নুড়ি, পাথর তুলে নদীকে গভীর করতে ৫৬৫ কোটি টাকা দরকার। এ সংক্রান্ত রিপোর্টও রাজ্য সেচ দফতরে পাঠানো হয়েছে। তবে কবে থেকে কাজ শুরু হবে, বা বিকল্প কী বন্দোবস্ত করা হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।