লোকসভা ভোটের আগে ফের দলবদল! তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে ফিরলেন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়। কলকাতায় শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে ‘ঘর ওয়াপসি’ হল তাঁর। কেন তাঁকে দলে দলে নেওয়া হল, তার ব্যাখা দিয়েছেন খোদ বিরোধী দলনেতা।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী জানান, সৌমেন রায়কে বিজেপি সাংসদ অনন্ত মহারাজ বিজেপি পরিষদীয় দলের সঙ্গে থেকে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এছাড়া সৌমেন রায় প্রধানমন্ত্রী বা অন্য শীর্ষ বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে খুব একটা চড়া আক্রমণ করেনি। তাই তাঁর ঘর ওয়াপসিতে সিলমোহর দিয়েছে দল। দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই তাঁকে দলে ফেরানো হয়েছে বলে জানান শুভেন্দু। এদিকে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরি জানান, যাঁরা তৃণমূলে গিয়েছে তাঁদের সকলকেই বিজেপিতে একদিন ফিরতে হবে।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের পর ২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও কানাইয়ালাল আগরওয়ালের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন সৌমেন রায়। তারপর থেকে তিনি তৃণমূলেই ছিলেন। যদিও বিধানসভার ভিতরে দলত্যাগ বিরোধী আইন থেকে বাঁচতে নিজেদের বিজেপি বিধায়ক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
শুভেন্দুর দাবি, “দল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া কাউকে সহজে ঘর ওয়াপসি করানো হয় না। কিন্তু ভাই সৌমেনের ক্ষেত্রে সেটা করা হল। কারণ, ও আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব, আদর্শের বিরুদ্ধে নিজে থেকে কোনও কুমন্তব্য করেননি। পঞ্চায়েতের সময় ওঁকে দিয়ে আমাদের বিপক্ষে কিছুটা বলানো হয়েছে। ওই কাজগুলো তিনি করেননি, বরং করানো হয়েছে।” এই ঘর ওয়াপসির নেপথ্যে রাজবংশী সমাজের প্রতিনিধি তথা বিজেপির রাজ্যসভার বিধায়ক অনন্ত মহারাজ রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, “রাজবংশী সমাজের প্রতিনিধি অন্তত মহারাজের সুপরামর্শে সৌমেন বিজেপিতে যোগ দিলেন। ও আগেও জানিয়েছে, ও এবং ওর পরিবার বিজেপি ছাড়া কিছু বোঝে না।” তবে এই দলবদলকে আমল দিতে রাজি নয় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল সংবাদমাধ্যমকে জানান, এতে আমাদের দল আরও শক্তিশালী হল।
আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা সৌমেন রায়। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল করতেন তিনি। মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন এই বিধায়ক। একুশের ভোটের আগে ২০২০ সালে বিজেপিতে যোগ দেন সৌমেন। বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, তাঁকে প্রার্থী করার পর থেকেই বিজেপির অন্দরে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। রীতিমতো রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা-কর্মীরা। জিতে আসার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল সৌমেনের। অবশেষে তৃণমূলের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে ফিরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে এবার বিজেপিতে এলেন।