Lokesabha Election 2024 Darjeeling: হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন, বিজেপি যদি ভূমিপুত্রকে প্রার্থী না করে তাহলে নির্দল থেকে থেকে দাঁড়াবেন। বিজেপি ভূমিপুত্রকে বাদ দিয়ে ফের বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তাকেই টিকিট দিয়েছে। ফলে তাঁর পূর্বঘোষণা মতো নির্দল থেকে মনোনয়ন জমা দিলেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। তিনি শনিবার জেলাশাসকের দফতরে মনোয়ন জমা দিয়েছেন। যাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, বিজেপি কখনও দার্জিলিং কেন্দ্রে ভূমিপুত্রকে গুরুত্ব দেয়নি। তাই মানুষ বিশ্বাস হারাচ্ছে।
কী বলছেন বিজেপি বিধায়ক?
মনোনয়ন জমা দিয়ে বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা জানিয়েছেন, "আমি আগেই জানিয়েছিলাম, আমরা বিজেপির সহযোগী হলেও মানুষ ভূমিপুত্র চাইছে। তাই বিজেপি যদি ভূমিপুত্র না দেয়,আমি নিজে প্রার্থী হব। বিজেপি ভূমিপুত্র দেয়নি। তাই আমি মনোনয়ন জমা দিলাম।" তিনি জানান, তাঁর এই পদক্ষেপের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি যে পদক্ষেপ করবে তিনি মেনে নেবেন। তিনি বলেন, "এই লোকসভা নির্বাচনে আমার মূল এজেন্ডা হবে গোর্খাল্যান্ড। অন্যান্য দল এখন ঠিক করুক, তাঁরা আমাকে সমর্থন দেবে কি না।"
এর আগে কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা সাফ জানিয়েছিলেন,’ দল যদি পাহাড়ের কাউকে প্রার্থী করে তাহলে তার হয়ে প্রচার করব, কিন্তু যদি এবারও বহিরাগত প্রার্থী দেয় তবে আমি পার্টিতে থেকে সেই ক্যান্ডিডেটের বিরুদ্ধে নমিনেশন ফাইল করব।’ বিধায়কের হুঁশিয়ারি, এবারের লোকসভা ভোটে দার্জিলিঙে বহিরাগত কাউকে প্রার্থী করা চলবে না। করলে দলের বিরুদ্ধেই তিনি ভোটে লড়বেন।’ ইঙ্গিত কি বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তার দিকে? কেউ কেউ মনে করছেন তাই।
এদিকে তাঁর প্রার্থী হওয়ার খবর নিয়ে বিজেপি প্রার্থী তথা বর্তমান দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, "গণতান্ত্রিক দেশে উনি মনে করেছেন, দাঁড়িয়েছেন। এর কোনও গুরুত্ব নেই। তাঁকে শুভেচ্ছা থাকল।" যদিও তৃণমূল নেতা তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেছেন, "এতে পরিষ্কার বিজেপির নীতির প্রতি আস্থা নেই দলেরই। বিজেপি গোটা দেশের সঙ্গে দার্জিলিং কেন্দ্রকেও বারবার বহিরাগত প্রার্থী দিয়ে বঞ্চিত করেছে। মানুষ তার প্রতিবাদ জানাচ্ছে।"
পাহাড়ে গত ৫ বছরে পরিস্থিতি বদলেছে। আগের মতো একক আধিপত্য নেই। আগে পাহাড়ে ক্ষমতাসীন দল যাকে সমর্থনকরল, সেই জয়ের হাসি হাসত। কিন্তু গত কয়েক বছরে তৃণমূলের প্রবেশ এবং নতুন কয়েকটি দলের প্রতিষ্ঠার পর পাহাড়ে বিভিন্ন ভোটে অন্য অন্য দল জিতেছে। হামরো পার্টি, বিজিপিএমরা ক্ষমতা দখল করেছে। পরে যদিও দলদবদলের হিড়িকে সবই এখন অনিত থাপার বিজিপিএমের দখলে। তবে পাহাড়ের মানুষ যে আর এককভাবে কোনও দলকে অন্ধ বিশ্বাস করছেন না, তা পরিষ্কার। এরপর থেকেই ক্ষমতা ধরে রাখা বিজেপির পক্ষে কঠিন বলে মনে হচ্ছেষ বিধানসভা, পঞ্চায়েত, পুর নির্বাচনগুলিতে বিজেপি ও তাদের জোটসঙ্গীদের হারতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভূমিপুত্র ইস্যুতে খোদ বিজেপি বিধায়কের এই প্রশ্ন পাহাড়ের একটা অংশের মনোভাব বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শেষবার ২০০৪ সালে দার্জিলিঙের ভূমিপুত্র হিসেবে লোকসভায় যান কংগ্রেসের দাওয়া নারবুলা। ২০০৯ সাল থেকে দার্জিলিং লোকসভা আসনটি বিজেপির দখলে। ২০০৯ সালে সাংসদ হন যশবন্ত সিং। ২০১৪ সালে সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়া, ২০১৯ -এ রাজু বিস্তা। তিনজনের কেউই পাহাড়ের ভূমিপুত্র নন। এবারও বিজেপি রাজুবাবুতেই আস্থা রেখেছে।