টানা বৃষ্টি-দুর্যোগ চলছে পাহাড়ে। ফলে পাহাড়ের উপরের অংশ নরম হয়ে উপর থেকে ক্রমাগত গড়িয়ে পড়ছে পাথর। ফলে বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে পরিস্থিতি। শুক্রবারই দুর্ঘটনার আশঙ্কায় তাই ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। শিলিগুড়ি থেকে সিকিম ও কালিম্পংগামী যানবাহনগুলোকে ঘুরপথে পাঠানো হয়েছে। পর বেলার দিকে একদিকে যাতায়াতের বন্দোবস্ত করে ওয়ান ওয়ে করে গাড়ি পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু নতুন করে ধস নামতে থাকায় এদিন সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শনিবার সকালে টানা বৃষ্টির জেরে ফের ধস নামে লিকুভিরে। পাহাড় থেকে ক্রমাগত গড়িয়ে পড়তে শুরু করে পাথরও। ফলে শনিবারও ভোগান্তি ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। শিলিগুড়ি-সিকিম জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সিঙ্গেল ওয়েতে গাড়ি চলছিল। কিন্তু তাও বন্ধ রাখা হয়েছে। রাস্তা থেকে পাথর সরানোর জন্য আর্থমুভার ব্যবহার করা হচ্ছে। বেশিরভাগ গাড়িকেই ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আগামী তিন-চারদিন উত্তরবঙ্গের বিশেষ করে উত্তর দিকের পাহাড় লাগোয়া জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, কালিম্পং, দুই দিনাজপুর সহ সব জেলাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৬ তারিখ পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস। পাশাপাশি এই জেলাগুলিতে তাপমাত্রাও কম থাকবে। ২৫ মার্চের পর থেকে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে লিকুভিরে ছোট বড় পাথর গড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এমনিতেই লিকুভির ধসপ্রবণ এলাকা। পাথর গড়িয়ে পড়ার ফলে যে কোনও সময় বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। এর আগে এমনই গড়িয়ে আসা পাথরে পিষ্ট হয়েছিল গাড়ি। তাই সেই রকম আশঙ্কা থাকায় আগাম সতর্কতামূল ব্যবস্থা নিয়ে বাধ্য হয়ে এই পথ দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বিপজ্জনক এলাকায় কালিম্পং পুলিশের তরফে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।
কোন রুটে চলছে গাড়ি?
শিলিগুড়ির সঙ্গে কালিম্পং ও সিকিমের গাড়ি চলাচল করছে ঘুরপথে ডুয়ার্স হয়ে। সেবক-গরুবাথান-লাভা রুটে। ফলে পর্যটকদের যাঁরা এই মুহূর্তে পাহাড় যাচ্ছেন বা ফিরছেন, তাঁদের বাড়তি সময় নষ্ট করতে হচ্ছে। অনেকেই যানজটের ভয়ে সফর কাটছাঁট করে আগেই ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে, কালিম্পং এবং সিকিম থেকে শিলিগুড়িমুখী যান চলাচল করছে ২৭ মাইল-সামথার রুটে।