Gajaldoba View Point: পর্যটকে ভরা গজলজোবা ভোরের আলো প্রকল্প। হঠাৎই ছন্দপতন। তিস্তাপাড়ের এই অপরূপ সুন্দর পর্যটনকেন্দ্রে আচমকা হানাদারি। ভাঙল প্রকল্পের ফেন্সিং, উপড়ে দিল একাধিক গাছ। পরে প্রকল্পের লোকজন ও বন দফতরের লোকজন সক্রিয় হয়ে ওঠায় এদিনের মতো বিপদ কাটলেও, ফের যে হানা দেবে না ওই আগন্তুক হানাদার, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই আতঙ্কে কাঁপছেন এলাকার লোকজন। তবু স্থানীয়দের এমন ঘটনা কখনও সখনও দেখা রয়েছে, পর্যটকদের কাছে এ এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা। এখানকার হোটেল-রিসর্টের প্রাইভেট প্রপার্টির মালিকরা দ্রুত প্রশাসনিক নিরাপত্তা দাবি করেছেন।
ব্যাপারখানা কী?
এই হানাদার আর কেউ নয়, দাঁতাল একটি হাতি। কয়েকদিন ধরেই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল হাতিটি। শনি ও রবিবার সেটি ভোরের আলো প্রকল্পের মধ্যেও ঢুকে পড়ে। রবিবার তাণ্ডবও চালায়। আচমকা ঘরের সামনে জংলি হাতি দেখে কেউ কেউ খুশিও হন। তবে পরক্ষণেই রুদ্রমূর্তি দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকেই। ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে একটি হোটেল কর্তৃপক্ষকে। তবে এখন পর্যন্ত অর্কিড পার্ক এবং কটেজের কোনও ক্ষতি হাতিটি করেনি বলে, পর্যটন দফতরের সূত্রে জানা গিয়েছে।
হাতির ডেরা গজলডোবা
গজলডোবা এলাকাটি হাতিরই ডেরা। আগে হাতি জল খেতে আসত প্রকল্পের পাশের জলাধারে। সেই থেকেই জায়গাটির নাম গজলডোবা বলে জানা যায়। এখনও হাতি আসে জল খেতে। তবে আগের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই কম। মানুষের উপস্থিতি ও ভিড় বাড়তে শুরু করায় হাতিদের স্বাভাবিক বাসস্থান বিঘ্নিত হয়েছে। যদিও প্রকল্প তৈরি হওয়ার পর হাতির ভিতরে ঢুকে আসা এই প্রথম। শুক্রবার এলাকায় অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় হাতিটিকে। এরপর শনিবার সন্ধ্যা এবং রবিবার ভোররাতে দাঁতালটি প্রকল্প এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব চালায় বলে জানা গিয়েছে।
ভোরের আলোতে গজরাজের তাণ্ডব
স্থানীয় সূত্রে খবর, বৈকুণ্ঠপুর থেকে বেরিয়ে হাতিটি সরস্বতীপুর হয়ে ভোরের আলো প্রকল্পের ভিতর ঢুকে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাঁচটি নারকেল গাছ, দুটো রাবার গাছের পাশাপাশি ক্ষতি করেছে এখানে থাকা একটি হোটেলের গেট ও ফেন্সিং। হাতির পায়ের চাপে অনেক জায়গায় ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে পেভার্স ব্লক। বাজি ফাটিয়ে সার্চ লাইট জ্বালিয়ে দাঁতালটিকে ভোরের আলো প্রকল্প থেকে বের করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান এখানে কর্মরত বেশ কয়েকজন। হোটেল মালিক প্রবীর শীল বলেন, ‘টানা দুদিন তিনবার হাতিটি হামলা চালাল। এই ক্ষতি পূরণ হবে কী করে? কেন হাতির ঢোকা বন্ধ করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে না?’
কী বলছেন কর্তারা?
পর্যটন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জ্যোতি ঘোষ সংবাদমাধ্য়মকে জানিয়েছেন হাতিটি এলাকায় ঢুকলেও কটেজের কোনও ক্ষতি করেনি। অক্ষত রয়েছে অর্কিড পার্কও। নতুন করে যাতে কোনও হাতি এখানে ঢুকতে না পারে, তার জন্য বন দফতরের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। ভোরের আলো প্রকল্পে রয়েছে ১৭টি কটেজ। পুজোর দিনগুলিতে প্রত্যেকটি কটেজই কার্যত বুকড রয়েছে। তাই পুজোর মধ্যে যাতে হাতি তাড়ানোর বন্দোবস্ত রাখা হয়, সেই দাবি জানানো হয়েছে।