Royal Bengal Coming To Buxa Tiger Reserve: বিশ্ব ব্যাঘ্র দিবসেই এল সুখবর। দীর্ঘদিন ধরেই বক্সায় বাঘ দেখা যায়নি, তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল আদৌ বাঘ আছে কি না। এর মধ্যে গত বছর থেকে এ বছরের মধ্যে বেশ কয়েকবার বাঘ দেখা গিয়েছে কয়েকটি জঙ্গলে। তাই আশা ছিল স্বীকৃতি মিলবে। স্বীকৃতি এলও। বক্সা প্রকল্পের জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে সেটা এবার স্বীকার করে নিল ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি। ব্যাঘ্র সুমারির রিপোর্ট পেশ করে বক্সাতে একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেয়েছে ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি। ২৮ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে ২০২২ সালে বক্সা–সহ দেশব্যাপী বাঘ সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি (এনটিসিএ)। সেই সমীক্ষায় বক্সার জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব উল্লেখ থাকায় রাজ্য বন দফতর, প্রকৃতি এবং পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলির মধ্যে খুশির হাওয়া বইছে।
অথরিটি ২০১৮ সালে বাঘ শুমারিতে বক্সা বাঘবনে বাঘের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। কিন্তু ২০২২ সালের বাঘ শুমারির রিপোর্টে বক্সার জঙ্গলে একটি বাঘের উপস্থিতির কথা প্রকাশ করা হয়েছে। এই রিপোর্ট শনিবার প্রকাশিত হয়। সেই রিপোর্টে নর্দার্ন ওয়েস্ট বেঙ্গলে দুটি বাঘের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে বক্সায় একটি বাঘের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানে বাঘ নিয়ে একটি শব্দ খরচ করেনি কেন্দ্র। তাই অন্য বাঘটি কোথায় দেখা গিয়েছে, তার পরিষ্কার তথ্য মেলেনি। যদিও নেওড়াতেই দীর্ঘদিন পরে বাঘ দেখা গিয়েছিল।
বক্সা টাইগার রিজার্ভের ডিএফডি (ওয়েস্ট) পারভিন কাসোয়ান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২০২২ সালের বাঘ শুমারিতে বক্সা টাইগার রিজার্ভ এলাকায় একটি বাঘের উপস্থিতি উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের বাঘ শুমারিতে বক্সায় বাঘের উপস্থিতি ছিল না। বক্সায় বাঘেদের বসবাসের জন্য অনুকূল পরিবেশ রয়েছে, বাঘের উপস্থিতিতে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। গত কয়েক বছরে বাঘেদের খাদ্যের জন্য প্রচুর হরিণ ছাড়া হয়েছে। বাঘেদের বসবাসের অনুকূল করে তুলতে বাঘবনে অনেক কাজ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
বক্সায় প্রথমে এক গাড়ির চালক স্বচক্ষে বাঘ দেখেন। বিষয়টি তিনি বনকর্তাদের জানান। এরপর ২০২১ সালে বক্সা বাঘবনে ট্রাপ ক্যামেরায় একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘের ছবি ধরা পড়ে। তখনই বাঘের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়ে যায়। প্রায় ৭৬০ বর্গকিলোমিটার বক্সার জঙ্গলে একসময় বাঘেদের গর্জন শোনা যেত। ১৯৯৩ সালে ভয়াবহ বন্যার পর বাঘের বসবাসের উপযোগী জায়গার ঘাস পলিমাটি চাপা পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। পানীয় জলের উৎসগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর থেকে বাঘের উপস্থিতির আর প্রমাণ মেলেনি।
বক্সায় ফের বাইরে থেকে বাঘ এনে ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেইমতো জলাধার সংস্কার, বিশেষ ধরনের ঘাস লাগানো, প্রায় হাজারখানেক হরিণ পর্যায়ক্রমে এনে জঙ্গলে ছাড়াও হয়েছে। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় একটি প্রতিনিধিদলও বক্সার জঙ্গলের অবস্থা ঘুরে দেখেছেন। বক্সার কোর এলাকায় থাকা কয়েকটি বনবস্তিকে অন্যত্র সরানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বন দপ্তর। শনিবার কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রকের প্রকাশিত স্ট্যাটাস অফ টাইগার-২০২২ রিপোর্টে সুন্দরবনে ১০১টি বাঘ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জলপাইগুড়ির গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের অধীন কালিম্পং জেলার নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানে দুটি বাঘের অস্তিত্বের কথা বন দপ্তর চার বছর আগেই জানিয়েছিল। কিন্তু এবারের রিপোর্টে নেওড়াভ্যালির নাম নেই।