রবিবার উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এখন সেখানেই আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই আবহেই সেখানে ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। দফায় দফায় বৈঠকের পরেও পাহাড়ের চা শ্রমিকদের পুজোর বোনাস নিয়ে কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। এর জেরে সোমবার ১২ ঘণ্টার পাহাড় বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই বনধকে সমর্থন করেছে বিজিএম সহ পাহাড়ের সমস্ত দল। এই পাহাড় বনধে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকে। এদিন সকাল থেকেই গরুবাথানের পান্ডারা মোড়ে পথ অবরোধ করেন চা শ্রমিকেরা। গরুবাথান ব্লকে লোয়ার, আপার ফাগু, অম্বিয়ক, মিশন হিল, কুমাই সহ আরও বেশ কয়েকটি চা বাগানে বন্ধ কাজকর্ম। পাশাপাশি বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন চা শ্রমিকরা। সোমবার গরুবাথানের বাজারে সাপ্তাহিক হাট। জেলার সর্ববৃহৎ হাট এটি। এদিন আর হাট বসেনি।
৮ বছর পর ১২ ঘণ্টার জন্য পাহাড়ে এই বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। চা বাগান শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ এই বনধের ডাক দিয়েছে। পাহাড়ের সকল রাজনৈতিক দলই এই বনধকে সমর্থন করেছে। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেসের শরিক অনীত থাপাও শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বনধ চলবে বলে জানা গেছে।
রবিবার বোনাস নিয়ে চতুর্থ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ছিল। বৈঠকে মালিকপক্ষ স্পষ্ট করে দিয়েছে, তারা ১৩ শতাংশের থেকে বেশি বোনাস দিতে নারাজ। ফলে পাঁচ ঘণ্টা বৈঠকের পরেও কোনও সমাধানসূত্র বের হয়নি। এই পরিস্থিতিতে চা বাগানগুলির বেশ কিছু শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ পার্বত্য চা সমূহ কমিটি সোমবার পাহাড় বনধের ডাক দেয়। অন্যদিকে এই ধর্মঘটের ডাককে সমর্থন জানায় অনীত থাপার দল। ফলে এদিনের দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে বনধের যে ভাল প্রভাব পড়তে চলেছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
প্রসঙ্গত, পাহাড়ের ৮৭টি চা বাগানের শ্রমিকদের এখনও পুজো বোনাসের নিষ্পত্তি হয়নি। ২ সেপ্টেম্বর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। তার পর থেকে তিনটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। শ্রমিকরা ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে অনড়। অন্যদিকে, মালিকপক্ষ ১৩ শতাংশের বেশি বোনাস দিতে নারাজ। আগের প্রতিটি বৈঠকই ভেস্তে গিয়েছে। রবিবারের বৈঠকেও কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে না আসায় ১২ ঘণ্টার পাহাড় বনধের ডাক দিয়েছে প্রতিটি শ্রমিক সংগঠন। পুজোর আগে ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে বন্ধ ডেকেছে তারা।