দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিরোধীদের হুমকি দিলেন তৃণমূলের মালদা জেলা সভাপতি ও মালতীপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সি। তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় অন্যান্য রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের মৃত্যুর বিচার না হলে তিনি বিরোধীদের গণপিটুনির হুমকি দিয়েছেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে কোটি কোটি পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বস্তরের মানুষকে সব ধরনের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু দিনের পর দিন বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, কখনও গোরক্ষার নামে, কখনও অন্য কারও নামে মারধর, শুধু খুন নয়, লাইভ টিভিতে দেখানো হচ্ছে।'
ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে মালদার এক পরিযায়ী শ্রমিকের। মৃত শ্রমিকের নাম মতিউর রহমান। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁকে মারধর করে খুন করা হয়েছে৷ অন্য রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের হত্যার বিষয়ে প্রতিবাদ না করার জন্য বাম, বিজেপি এবং কংগ্রেস সহ বিরোধীদের নিশানা করেন আবদুর রহমান বক্সি।
তিনি বলেন, 'সিপিএম বন্ধুরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়ে মিছিল করছে তাঁর সরকারের পতনের জন্য। কংগ্রেসের লোকেরাও এটিকে সমর্থন করছে এবং মোমবাতি জ্বালিয়েছে। কিছু জায়গায় অধীর রঞ্জন চৌধুরীও 'খলিফা'-এর মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। কিন্তু অন্য রাজ্যে যখন হিংসা হচ্ছে, তাঁরা আশ্চর্যজনকভাবে তখন আমরা তাঁদের পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করতে, রাত দখলের ডাক দিতে বা মোমবাতি মিছিল করতে দেখি না। মতিউরের স্ত্রী ও সন্তানের জন্য কংগ্রেস ও বিজেপি কোনও মিছিল করেনি। আমার বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের বন্ধুদের জানা উচিত যে গণপিটুনি দিয়ে মতিউরকে খুন করা হয়েছে। যদি এর সুবিচার না পাই তবে মানুষকে বলব বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসকে গণপিটুনি দিয়ে যেন শেষ করা হয়। তোমাদের গযণপিটুনিই প্রাপ্য। এর থেকে নিস্তার নেই। বিজেপির প্রধানমন্ত্রী তুমি খুন করে অট্টহাসি হাসছ। এই দেশ তোমার আর বিজেপির বাপের নয়। এই দেশ কংগ্রেস, সিপিএমের বাপের নয়।'
এই বিষয়ে মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেছেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের কোনও লোককে চাকরি দিতে অক্ষম। তাই পশ্চিমবঙ্গের লোকেরা চাকরির সন্ধানে অভিবাসী শ্রমিক হিসাবে অন্য রাজ্যে যাচ্ছে। কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু কেন? এখান থেকে লোকেদের চাকরি করতে অন্য রাজ্যে যেতে হচ্ছে কেন? বাংলা আর সুরক্ষিত নয়, তাই তারা এসব কথা বলছে।'