২৩ বছর পর আলিপুরদুয়ারে বক্সার জঙ্গলে নিজের অস্তিত্বের জানান দিয়েছেন বাঘমামা। ছবি পেলেও এখনও পর্যন্ত, বাঘটির অবস্থান নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি বন দফতর।
রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আতঙ্ক তাই তাড়া করছে ঐতিহাসিক বক্সা ফোর্টের দুর্গম ১৩টি গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষকে।
লেপচা, ডুকপা আদিবাসী জনজাতির মানুষদের দুর্গম এই পথে একা চলাফেরা করতে বারণ করায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ভয় আরো চেপে বসেছে এই এলাকার মানুষদের মধ্যে।
ফলে আপাতত পাহাড়ের চূড়ায় ১৩টি গ্রামে পৌছানোর প্রায় ১০ কিলোমিটারের বেশি পথ দলে দলে বেশ কয়েকজন একসাথে যাতায়াত ছাড়া আর এখন কোন উপায় নেই।
বক্সা পাহাড়ের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত এখন যানবাহন যাতায়াত করতে পারে। জিরো পয়েন্টের পর থেকে হাটা পথ ছাড়া আর অন্য কোন উপায় নেই।
আদমা, লেপচাখা, চুনাভাটি, সান্তালেবাড়ি সহ বক্সা পাহারের ১৩টি গ্রামে যাওয়ার একমাত্র উপায় জিরো পয়েন্ট থেকে হাটা পথ। পাহাড়ের পাকদন্ডি বেয়ে বক্সা বাঘ বনের জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ওই সব গ্রামে যাওয়ার একমাত্র উপায়।
আর এই পাহাড়ি বাকে কখন গায়ের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে ডোরাকাটা বাঘ সেই ভয়ে আতঙ্কিত বক্সা পাহারের ১৩টি গ্রামের মানুষরা।
তাদের এই ভয় আরো সুদৃঢ় হয়েছে বক্সা জাতীয় উদ্যানের কর্তৃপক্ষের ঘোষনায়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা শ্রী হরিশ বলেন, “ বক্সা বাঘ বনের সর্বত্র আমরা বন বস্তিবাসিদের সাবধান করে দিয়েছি। জঙ্গলে একা একা চলা ফেরা করতে বারন করা হয়েছে। রাতে ঘর থেকে বের হতেও বারন করা হয়েছে। কোথায় কিছু খবর পেলে তৎক্ষনাত আমাদের বলতে বলা হয়েছে।”
বক্সা পাহাড়ের বাসিন্দা লকপে ভুটিয়া বলেন, “ আমরাতো এতকাল এই পথে নিরাপদেই যাতায়াত করতাম। কিন্তু বন দফতর সম্প্রতি সাবধান করে দিয়েছে। তার পরেই ১৩টি গ্রামের মানুষেরা ভয়ে আতঙ্কে রয়েছে। আমরা একা একা আর এই পথে যাচ্ছি না। কয়েকজন মিলে এই পথে যাতায়াত করছি।“
এদিকে শুক্রবার থেকে বক্সা বাঘ বনে জঙ্গল সাফারি চালু করার কথা ঘোষনা করেছে বনদফতর। শনিবার বাঘের ছবি ধরা পড়ার পর রবিবার থেকে এই বনাঞ্চলে জঙ্গল সাফারি বন্ধ করে দিয়েছিল বন দফতর। পাচদিন বন্ধ থাকার পর ফের শুক্রবার থেকে এই সাফারি ফের চালু হচ্ছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন, “ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়ার পর আমাদের নির্দিষ্ট কিছু কাজ ও বনকে কোনভাবেই যাতে বিরক্ত করা না হয় সেই কারনে পাঁচদিন আমরা সাফারি বন্ধ রেখেছিলাম। অবশেষে শুক্রবার থেকে ফের সাফারি চালু করে দেওয়া হল। পর্যটকরা এদিন থেকে আবার বক্সা বাঘ বনের নির্দিষ্ট রুটে সাফারি করতে পারবেন।”