আরজি করের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধার ঘিরে উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি। ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। মৃতার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে পুলিশ সূত্রে খবর। এই ঘটনায় বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে গোটা গ্রাম। জানা যাচ্ছে জয়নগরে নাবালিকা ধর্ষণ ও মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে পারে নাবালিকার পরিবার।
জানা গিয়েছে, নাবালিকার পরিবারের রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা নেই। নাবালিকার ময়নাতদন্তও কেন্দ্রীয় কোনও সংস্থায় করতে চেয়ে হাইকোর্টে তারা আবেদন জানায়। আদালত কল্যাণী এইমসের চিকিৎসকদের দিয়ে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এ বার পরিবারের তরফে ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হতে পারে। রবিবারের শুনানিতেও তারা সেই ইঙ্গিত দিয়েছে। সেই মতো আজ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন পরিবারের আইনজীবী। আজ মামলা দায়েরের অনুমতি মিললে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে এখনো থমথমে রয়েছে কুলতলি থানার কৃপাখালীর হালদারপাড়া গ্রাম। রয়েছে চাপা উত্তেজনা। পরিস্থিতি সামলাতে রয়েছে প্রচুর পুলিশ। এলাকার মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। যদিও মহিষমারি হাট এলাকা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলেছেন, লোকজন আসছে। এই মহীশমারি হাটের পাশেই মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। সেখানেও মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
এদিকে রবিবার জয়নগরে নির্যাতিতার বাড়িতে যায় জুনিয়র চিকিৎসদের প্রতিনিধিদল। সেই দলে ছিলেন আরজি কাণ্ডে আন্দোলন করা জুনিয়র ডাক্তাররা। পাঁচ জন ডাক্তারের মধ্যে ছিলেন কিঞ্জল নন্দ, দেবাশীষ হালদার প্রমুখ। মৃত নাবালিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে পাশে থাকার বার্তাও দেন। জুনিয়র ডাক্তার ছাড়াও মৃত শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকি। নওশাদ বেরিয়ে গেলে মৃত শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
রবিবার দুর্গাপুজোর উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে জয়নগরের ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ক্রাইম ইস ক্রাইম। যে অপরাধ করবে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের এখানে তিনটে ফাঁসির অর্ডার হয়েছে। আমি চাই কুলতলির ঘটনাটাও পুলিশ পকসো কেসে তুলে তিন মাসের মধ্যে ফাঁসির অর্ডার দেবে।”